অডিটরদের দশম গ্রেডের একই বিষয়ে দুই দিনে দুই ধরনের সিন্ধান্ত ?
অডিটরদের দশম গ্রেডের একই বিষয়ে দুই দিনে দুই ধরনের সিন্ধান্ত ?
অডিটরদের দশম গ্রেডের একই বিষয়ে দুই দিনে দুই ধরনের সিন্ধান্ত ?
অডিটরদের দশম গ্রেডের একই বিষয়ে দুই দিনে দুই ধরনের সিন্ধান্ত ?
অডিটরদের দশম গ্রেডের একই বিষয়ে দুই দিনে দুই ধরনের সিন্ধান্ত ?
অর্থ বিভাগ প্রশাসন ও সমন্বয় অনুবিভাগ প্রশাসন-২ অধিশাখা ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ “ মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নং- ১৩৯৯/২০১৫ দায়ের করা হলে মহামান্য আদালত কর্তৃক পিটিশনারদের পক্ষে রায় প্রদান করা হয়। উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে সরকার কর্তৃক উচ্চ আদালতে সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল নং-২৭১১/২০১৬ দায়ের করা হলে বিগত ১৯-০৩-২০১৭ তারিখ বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক আপিল খারিজ করা হয়। পরবর্তীতে সরকার পক্ষ থেকে উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে মহামান্য আপিল বিভাগে সিভিল রিভিউ পিটিশন নং-৩৯৮/২০১৮ দায়ের করা হলে বিগত ১১-০২-২০১৮ তারিখ বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক রিভিউ পিটিশনটি খারিজ করা হয়। রিট পিটিশন নং-১৩৯৯/২০১৫ এর সকল আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় সরকার ৬১ জন পিটিশনার (অডিটর)-এর বেতন গ্রেড-১১ হতে গ্রেড-১০ এ উন্নীত করার মাধ্যমে বিজ্ঞ আদালতের রায় প্রতিপালন করে। পরবর্তীতে ৩৩৬ জন অডিটর মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে কনটেস্ট পিটিশন নং-৭৫৯/২০১১ এবং ২০১ জন অডিটর কনটেম্পট পিটিশন নং-২৬৪/২০১ ৫৬৯/২০২১ করেছেন। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ বিবেচ্য কনটেস্ট পিটিশনারদের রিট পিটিশন নং-১৩৯৯/২০১৫ এর পিটিশনারদের প্রাপ্ত সুবিধার অনুরূপ সুবিধা প্রদানের আদেশ প্রদান করেছেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, কনটেস্ট পিটিশন নং-৭৫৯ /2019, 268/2021 ৫৬৯/২০২১ এর সকল আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা প্রয়োজন। কেননা, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ২০/১০/২০১২ তারিখের নির্দেশনা অনুযায়ী একটি মামলার সকল আইনী প্রক্রিয়া নিঃশেষ (Exhaust) হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
অডিটরদের দশম গ্রেডের বিষয়ে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সিন্ধান্ত ?
অর্থ বিভাগ প্রশাসন ও সমন্বয় অনুবিভাগ প্রশাসন-২ অধিশাখা ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ কনটেস্ট পিটিশন নং- ৭৫৯/২০১৯, নং-২৬৪/২০২১ ও নং-৫৬৯/২০২১-এর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পিটিশনার (অডিটর)গণকেও রিট পিটিশন নং-৯৩৯৯/২০১৫ এর ৬১ জন পিটিশনার (অডিটর)দের ক্ষেত্রে প্রদত্ত সুবিধার অনুরূপ সুবিধা প্রদানপূর্বক কনটেস্ট পিটিশন নং-৭৫৯/২০১৯, নং-২৬৪/২০২১ ও নং-৫৬৯/২০২১-এর ক্ষেত্রে বিজ্ঞ আদালতের আদেশ প্রতিপালনের নিমিত্ত নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
অডিটর ১১ম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের প্রক্রিয়া: বৈষম্যের অবসান কি হবে?
অডিটরদের দীর্ঘদিনের দাবি: দুই গ্রেডের বৈষম্য দূর করুন
বাংলাদেশের অডিট ও একাউন্টস বিভাগের অডিটর পদটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটি বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। অডিটরদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে। মহামান্য আদালতের রায় এবং মাননীয় আইন উপদেষ্টা জনাব ড. আসিফ নজরুলের মতামত থাকা সত্ত্বেও অডিটরদের দাবি পূরণ করা হয়নি।
সিএজি কার্যালয়ের অধীনে থাকা অডিটরগণ দীর্ঘদিন ধরে এই পদে কাজ করে আসছেন, অথচ তাদের কাজের গুরুত্ব এবং জবাবদিহিতার পরিপ্রেক্ষিতে এই পদটি ১০ম গ্রেডে উন্নীত হওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
আদালতের রায় এবং সরকারের পদক্ষেপ
রিট পিটিশন নং-৯৩৯৯/২০১৫ এর রায় মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট গত ০২/০২/২০১৬ খ্রি. তারিখে প্রদান করে। উক্ত রায়ে পিটিশনারদের পদটিকে অর্থাৎ অডিটর পদটিকে ১০ গ্রেডে উন্নীতকরণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়। উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে সরকার কর্তৃক উচ্চ আদালতে সিভিল পিটিশন ফর লিড আপিল নং ২৭১১/২০১৬ দায়ের করা হলে বিগত ১৯/০৩/২০১৭ খ্রিঃ তারিখে বিগ্য আদালত কর্তৃক আপিল খারিজ করা হয়। পরবর্তীতে সরকার পক্ষ থেকে উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে মহামান্য আপিল বিভাগে সিভিল রিভিউ পিটিশন নং- ৩৯৮/২০১৮ দায়ের করা হলে বিগত ১১/০২/২০১৮ তারিখে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক রিভিউ পিটিশনটি খারিজ করা হয়। রায়ের প্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয় শুধুমাত্র রিটকারী ৬১ জন অডিটরের পদকে ১১তম গ্রেড হতে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে স্পষ্টতই বৈষম্যের সৃষ্টি করে। অডিটর পদটিকে ১০ গ্রেডে উন্নীত না করায় বাকি প্রায় ৪০০০ অডিটর ১১তম গ্রেডে অবস্থান করে। আদালতের রায় সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন না করায় ৩টি কনটেম্পট পিটিশন (কন্টেম্পট পিটিশন নং-759/2019, 264/2021 এবং ৫৬৯/২০২১) দায়ের করা হয়। কনটেস্পট পিটিশনের রায়েও পিটিশনকারী অডিটরদের পূর্বের প্রদত্ত রায়ের অনুরূপ মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা প্রদানের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়।
উক্ত রায়ের আলোকে এবং অর্থ মন্ত্রণালয় অর্থ বিভাগ এর স্মারক নং- ৩২৮, তারিখ: 03/11/2013 খ্রি. ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং-৫৫ তারিখ: ১১/০৪/২০১৮ খ্রি. এর আলোকে অডিটর পদকে ১১তম হতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে (পূর্বে বাস্তবায়নকৃত ৬১ জন অডিটরের ন্যায়) গত ৮ই আগস্ট ২০১৪ তারিখে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) মহোদয়ের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছিল।
আদালতের রায় অনুসারে ৬১ জন অডিটরকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়, তবে বাকি ৪০০০ জন অডিটরকে এখনও ১১তম গ্রেডে রাখা হয়েছে।
এই বৈষম্যের ফলে সারা দেশের অডিটরদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। আদালতের রায় পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন না হওয়ায় কনটেম্পট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে।
সিএজি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিভঙ্গি
অডিটরদের বেতনগ্রেড উন্নীতকরণের জন্য সিএজি অফিস থেকে বিভিন্ন সময়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। ৮ই আগস্ট, ২০১৪ তারিখে সিএজি অফিসে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। এরপরে, ১২/০৮/২০২৪ তারিখে সচিব, অর্থ বিভাগ বরাবর আরও একটি পত্র প্রেরণ করা হয়। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় এখনো পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-২ অধিশাখা থেকে এই বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে মতামত চাওয়া হয়। মাননীয় আইন উপদেষ্টা জনাব ড. আসিফ নজরুল ১৯/০৮/২০২৪ তারিখে তার ইতিবাচক মতামত প্রেরণ করেন। এরপরও বিষয়টি অনিষ্পন্ন রয়েছে।
অডিটর পদটি ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার প্রক্রিয়াটি অর্থ সচিবের কারণে বিলম্বিত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠির ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে এই প্রক্রিয়াটি আটকে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে অডিটরদের মধ্যে ক্ষোভ এবং হতাশা বিরাজ করছে। তারা এই বৈষম্যের অবসান চান এবং দ্রুত তাদের অধিকার আদায়ের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানাচ্ছেন।
অডিটরদের অধিকার পুনরুদ্ধারের দাবিতে আন্দোলন
অডিটরগণ এখন নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। তাদের দাবি, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অডিটরদের ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। এটি না হলে আন্দোলন আরো তীব্র হতে পারে।
সিএজি অফিস এবং আইন উপদেষ্টার সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও অর্থ মন্ত্রণালয় কেন এ বিষয়ে বিলম্ব করছে, তা অডিটরদের কাছে স্পষ্ট নয়। তারা একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান চান, যেখানে তাদের ন্যায্য অধিকার দ্রুত প্রতিষ্ঠিত হবে।
উপসংহার
অডিটরদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের কাজের গুরুত্ব এবং দায়িত্বের পরিপ্রেক্ষিতে এই দাবি যৌক্তিক। আদালতের নির্দেশনা, আইন উপদেষ্টার মতামত এবং সিএজি অফিসের সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও, কেন এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অডিটররা চান, তাদের এই বৈষম্য দ্রুত দূর করা হোক, যাতে তারা তাদের কাজের প্রতি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারেন এবং সরকারের আর্থিক স্বচ্ছতা বজায় রাখতে পারেন।
আমি বাংলাদেশ সরকারের অডিট এন্ড একাউন্টস বিভাগের একজন কর্মচারি। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে কর্মরত থাকায় বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শেয়ার করে থাকি। তারপরও যে কোন ভুল ত্রুটি হলে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কোন পরামর্শ থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।