কোলেস্টেরল কি ? কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা ও ঘরোয়া উপায় ?
কোলেস্টেরল কি ?
কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বি। কোলেস্টেরল বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন Triglycerides, LDL, HDL and Total Cholesterol. এদের মধ্যে একটি উপকারি আর অন্যগুলো ক্ষতিকর।
Cholesterol শীর্ষ মাত্রা হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। ডব্লিউএইচও মতে, বিশ্বব্যাপী হৃদরোগজনিত জটিলতার এক তৃতীয়াংশ শ্রেষ্ঠ কোলেস্টেরলের জন্য দায়ী। বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবনযাপন পদ্ধতি এবং অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসে রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে যায় । কতিপয় কিছু আহার বিদ্যমান যেগুলো রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করতে পারে। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এসব খাবার অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করতে হবে। গুগল নিউজ হতে আপডেট ” নিউজ হতে আইবাস++ ও সরকারি নিউজের আপডেট সংগ্রহ করে নিতে পারেন।
Cholesterol আমাদের শরীরের ১টি প্রয়োজনীয় উপাদান। এটি স্নায়ুতন্ত্র, হরমোন উৎপাদন, চর্বি ও নিউ কোষ গঠনে অংশগ্রহণ করে থাকে। তবে প্রবলেম তখনই তীব্র হয় যখন প্রয়োজনের তুলনায় এটা রক্তে অতিরিক্ত হয়ে যায়। কোলেস্টেরল অধিক থাকার জন্য অ্যাথেরোস্কোলোরোসিস রোগ হয়। এতে রক্তনালির দেয়াল কঠিন ও সরু হয়ে যায়। টাইম মতো চিকিৎসা না নিলে মরণ পর্যন্ত ঘটতে পারে।
কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা ?
কোলেস্টেরল বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের একটি উৎকৃষ্ট কারণ। পৃথিবীর প্রায় ৫০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভুগছেন। উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়, যা মৃত্যুর সেরা অতুলনীয় কারণ।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে কিছু খাদ্যের পরামর্শ দিয়েছেন ডায়েটিশিয়ান গরিমা গোয়েল । এসব খাবারের সংমিশ্রণ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
আরও জানুন: প্রশাসনিক ও ব্যাক্তিগত কর্মকর্তারা মহার্ঘ ভাতা নয় চান অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট ?
যে সব খাদ্য কোলেস্টেরল কমায় ?
ডাল ও ব্রাউন রাইস:
ডাল শরীরে এলডিএল কম করার জন্য হেল্প করে। যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে খারাপ কোলেস্টেরল হিসেবে চিহ্নিত। ডালে প্রচুর হিসাবে ফাইবার আছে। অন্যদিকে ব্রাউন রাইস হৃদরোগের প্রবলেম কমায় প্রায় বিশ শতাংশ।
হলুদ ও গোলমরিচ
হলুদের অ্যান্টি–ইনফ্লেমেটরি গুণ কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করার জন্য সহযোগিতা করে। অন্যদিকে গোলমরিচে থাকে পিপেরাইন হলুদ থেকে কারকিউমিন শোষণে শরীরকে সহযোগিতা করে। স্যুপ, বা যে কোনও গ্রেভিতে এই দুই উপকরণ একই পাত্র রাখুন।
কাজুবাদাম ও টক দই:
মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটে ভরপুর কাজুবাদাম হৃৎপিণ্ডের জন্য খুবই ভাল। সমীক্ষা বলছে ,টক দধি প্রায় চার শতাংশ কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করতে পারে। এই দুইটা জিনিস ১টি দারুন স্ন্যাক্স হিসেবে ডায়েটে রাখলে প্রচুর অনুগ্রহ পাবেন।
আরও জানুনঃ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারিদের জন্য মহার্ঘ ভাতা থাকছে না বিশেষ ইনক্রিমেন্ট ২০২৩ ?
গ্রিন টি ও পাতিলেবু:
ইমিউনিটি বাড়াতে অধিকাংশই গ্রিন টি খান। এর সাথে লেবু মেশালে বহু হিতকর পাওয়া যায়। লেবু মেশানো গ্রিন টি এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস, ফ্ল্যাভনয়েডস কোলেস্টেরল কন্ট্রোলে রাখতে সাহায্য করে।
রসুন ও পেঁয়াজ : রসুন ও পেঁয়াজ রান্নার উৎকৃষ্ট দুই উপকরণ। দুই উপকরণেরই কোলেস্টেরল কমানোর বৈশিষ্ট্য রয়েছে। রসুনে থাকা অ্যালিসিন কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে হেল্প করে। অন্যদিকে পেঁয়াজে থাকা কোয়ারসেটিন, এলডিএল কোলেস্টেরলের অক্সিডেশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে। এই দুইটা উপকরণ যখন একত্রিত হয়, তখন কেবল আহারে স্বাদই বাড়াবে না, দেহের জন্যও উপকারী হবে।
রক্তে কোলেস্টেরল কমানোর উপায় ?
কোলেস্টেরল কমানোর জন্য যে সব খাদ্য বর্জন করতে হবে ;
যেমন-ঘি, মাখন, মাংসের চর্বি, কলিজা মগজ, মাছের ডিম, সুবিশাল মাছের মাথা, বৃহৎ চিংড়ি, নারিকেল, দুধের সর, হাড়ের মজ্জা, ঘনীভূত দুধ, হাঁসের co Meat, cakes, puddings, custards, ice creams, sweets, halwa, curds, chicken skin.
- নায়াসিন কোলেস্টেরল কমাতে হেল্প করে। এটি পাওয়া যাবে-আলু ভুসিযুক্ত আটা, সবুজ শাকসবজি, মাছ ও পরিজে।
- * খালিপেটে ১ কোয়া কাঁচা রসুন ও সঙ্গে ২০-২৫টি কাঁচা ভিজানো ছোলা আহার করা যেতে পারে।
- * অসম্পৃক্ত চর্বি খাওয়ার অভ্যাস করার জন্য হবে। যেমন-বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ থেকে তৈরি তেল ও মাছের তেল।
- * খনিজ লবণের মধ্যে ক্লোরিন, জিঙ্ক, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম কোলেস্টেরল কন্ট্রোলে রাখে। এ উপাদানগুলো যাতে খাদ্যের ভিতরে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য হবে।
- * মাছের তেলে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। এটা রক্তজমাট বাঁধার কাজকে ঠেকায়। এ জন্য মাছের তেল খেলে রক্তের ক্ষতিকর চর্বি LDL-এর মাত্রা হ্রাস পায় যায় তার সাথে ধমনির দেয়ালে এটা জমা হয়।
- * কোলেস্টেরলের নেই-খাদ্যশস্য, চা, কফি, যে কোনো ফল, শাকসবজি, বাদাম তেল, সয়াবিন তেল, মাছের তেল, ডাল জাতীয় খাবার, মাছ ও ডিমের ধলা অংশ।
আরও জানুনঃ ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ৯ম পে স্কেল এবং মহার্ঘ ভাতা সহ ১১ দফা দাবি সরকারি কর্মচারীদের ?
কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায় ?
হলুদ:
কোলেস্টেরলের মাত্রা থাকতে হবে ২০০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের মধ্যে ও এলডিএল-এর ১০০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের মধ্যে। কো-মর্বিডিটি থাকে তাহলে এলডিএলের মাত্রা ৮০-র ভিতরে রাখার জন্য হবে। মাত্রা ছাড়ালেই চিকিৎসকের উপদেশ নিয়ে ওষুধ খেতে হবে। হলুদ প্রয়োগ করা হয়। একইভাবে, এটি খারাপ কোলেস্টেরল অপচয় করতেও কাজ করে। আসলে, হলুদের মধ্যে থাকা উপাদানগুলি রক্তের ধমনী থেকে কোলেস্টেরল অপসারণ করতে কাজ করে। আপনি প্রভাতকালে গরম পানির সাথে আধা চা চামচ হলুদ গুঁড়ো খেতে পারেন।
গ্রিন টি:
গ্রিন টি ওজন কমাতে, বিপাকের উন্নতির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া আধুনিক এক গবেষণা হতে জানা গেছে যে গ্রিন টির মধ্যে থাকা উপাদানগুলি মন্দ কোলেস্টেরল ফাস্ট ক্ষয় করার জন্য কাজ করে। আপনি যদি এর স্বাদ পছন্দ না করেন কিন্তু গ্রিন টি ক্যাপসুল নিতে পারেন।
কোলেস্টেরল কমানোর উপায় ?
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা স্বাস্থ্যকর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। কোলেস্টেরল কমানোর কিছু সহজ ও কার্যকর উপায় রয়েছে যা প্রতিদিনের জীবনে অনুসরণ করা যায়।
প্রথমত, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। খাবারে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, এবং মোনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। ওটস, বাদাম, জলপাই তেল, এবং চিয়া সিড কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। এ ছাড়া ট্রান্স ফ্যাট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট পরিহার করুন, যা অধিকাংশ প্রক্রিয়াজাত খাবারে পাওয়া যায়।
দ্বিতীয়ত, শারীরিক কার্যকলাপ বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা বা ব্যায়াম করুন। এটি ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়াতে এবং খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমাতে সাহায্য করে।
তৃতীয়ত, ধূমপান ত্যাগ করা ও মদ্যপান নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। ধূমপান কোলেস্টেরল বৃদ্ধির অন্যতম কারণ এবং মদ্যপানের ক্ষেত্রে পরিমিতি বজায় রাখা উচিত।
এছাড়া, মানসিক চাপ কমানোও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। নিয়মিত মেডিটেশন বা যোগব্যায়াম মানসিক চাপ হ্রাস করে এবং সার্বিক স্বাস্থ্য উন্নত করে।
এই সাধারণ পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করে, আপনি সহজেই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারেন।
আমি বাংলাদেশ সরকারের অডিট এন্ড একাউন্টস বিভাগের একজন কর্মচারি। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে কর্মরত থাকায় বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শেয়ার করে থাকি। তারপরও যে কোন ভুল ত্রুটি হলে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কোন পরামর্শ থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।