লাইফ ভেরিফিকেশন কী ? লাইফ ভেরিফিকেশন করার নিয়ম ?
সরকারি চাকরিজীবীগণ চাকরি শেষে পেনশন এবং এককালীন অনুতোষিক পেয়ে থাকেন।পেনশন পতিমাসে পাওয়ার জন্য একজন পেনশনারকে এগার মাস পরপর যে কোন হিসারক্ষন অফিসে উপস্থিত তিনি বেঁছে আছে কিনা তা যাচাই করতে হয়।পেনশনারগণ সাধারণত বেশী বয়স্ক হয়ে থাকে। তাদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থ থাকায় তারা সময়মত হিসাবরক্ষণ অফিসে আসতে পারেনা। এ জন্য সকল পেনশনারের সুুবিধার কথা চিন্তা করে পেনশন ফান্ড ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক Pensioner Life Verification App চালু করা হয়েছে।
লাইফ ভেরিফিকেশন কী?
ট্রেজারী রুলস এর এসআর-২২৬ অনুযায়ী বছরে অন্ততপক্ষে একবার পেনশনারের জীবিত থাকার প্রমাণ নিশ্চিত করতে হয়, এটাই লাইফ ভেরিফিকেশন।
লাইফ ভেরিফিকেশন করার নিয়ম ?
কতদিন পরপর লাইফ ভেরীফিকেশন করতে হবে ?
- যে কোন পেনশনারকে ১১ ( এগার মাস পর পর লাইফভেরীফিকেশন করতে হয়। যেমন কোন পেনশনার যদি ১৫/০৮/২০২৪ তারিখে লাইফ ভেরীফিকেশন সম্পন্ন করে থাকে, তাহলে তার পরবর্তী লাইফ ভেরীফিকেশন করতে হবে ১৫/০৮/২০২৫ খ্রিঃ তারিখে। এ সময়ের মধ্যে আর লাইফ ভেরীফিকেশন করা প্রয়োজন নেই।
লাইফভেরীফিকেশন করতে কি কি তথ্যের প্রয়োজন ?
- লাইফ ভেরীফিকেশন করতে পেনশনারে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর।
অথবা
- ব্যাংকের হিসাব নম্বর ।
অথবা
- পেনশনারের মোবাইল নম্বর।
লাইফভেরীফিকেশন জন্য কোথায় যোগাযোগ করবেন ?
- যে কোন উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস।
- যে কোন জেলা হিসাবরক্ষণ অফিস।
- যে কোন বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ অফিস।
- পেনশন এন্ড ফান্ড ম্যানেজমেন্ড এর প্রধান কার্যালয়, সেগুনবাগিচা, ঢাকা।
Pensioner Life Verification online এ করার জন্য কোন কোন ক্ষেত্রে ননম্যারেজ সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয় ?
- স্বামীর পেনশন যদি স্ত্রী পেয়ে থাকে, তাহলে স্ত্রীর ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত ইউুনয়ন পরিষদ অথবা পৌরসভা অথবা সিটিকরর্পোরেশন কতৃক প্রদত্ত ননমারেজ সার্টিফিকেট প্রযোজন হবে।
- স্ত্রীর পেনশন যদি পেয়ে স্বামীর থাকে , তাহলে অজীবন ইউুনয়ন পরিষদ অথবা পৌরসভা অথবা সিটিকরর্পোরেশন কতৃক প্রদত্ত ননমারেজ সার্টিফিকেট প্রযোজন হবে।
পারিবারিক-পেনশন-ফরম-২-২ ” নিউজ হতে আইবাস++ ও সরকারি নিউজের আপডেট সংগ্রহ করে নিতে পারেন।
লাইফ ভেরিফিকেশন কেন করতে হয় ?
- যথাসময়ে লাইফ ভেরিফিকেশন না করলে দ্বাদশ মাসে পেনশন পেমেন্ট বন্ধ হয়ে যায় ।
- ঘরে বসেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনার লাইফ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে নিম্নোক্ত ধাপসমূহ অনুসরণ করুন।
- গুগল প্লে-স্টোর হতে “Pensioner Verification” অ্যাপটি মোবাইল ফোনে ইনস্টল করুন।
- আপনার এনআইডি নম্বর এবং ইপিপিও এন্টি দিয়ে অ্যাপে লগইন করুন।
- লাইফ ভেরিফিকেশন অপশন-এ গিয়ে পরপর দু’বার নিজের মুখমণ্ডলের ছবি তুলে লাইফ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন
- লাইফ ভেরিফিকেশন সম্পন্নের পর মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে নোটিফিকেশনের মাধ্যমে বিষয়টি আপনাকে নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি মোবাইল ফোনে এসএমএস প্রদান করা হবে।
আরও জানুনঃ প্রশাসনিক ও ব্যাক্তিগত কর্মকর্তারা মহার্ঘ ভাতা নয় চান অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট ?
অ্যাপের মাধ্যমে লাইফ ভেরিফিকেশন করা সম্ভব না হলে করণীয় কি ?
- নিকটস্থ হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে সশরীরে উপস্থিত হয়ে আইবাসের মাধ্যমে লাইফভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন।
” লাইফ ভেরিফিকেশন এ্যাপের মাধ্যমে আপনি নিজেই আপনার পরবর্তী লাইফ ভেরিফিকেশন করতে পারবেন, কোথাও যেতে যেতে হবে না। এ জন্য এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে Google Play. Store Pensioner Verification এ্যাপটি ডাউনলোড করে ইন্সটল করুন “ এই ম্যাসেজ আসলে কি করণীয় ?
সমাধানঃ এই ধরনের ম্যাসেজ পেয়ে পেনশনারগণ মনে করছেন, তার লাইফ ভেরীফিকেশন করা সময় হয়েছে এবং সবাই হিসারক্ষণ অফিসে কষ্ট করে চলে আসতেছে। আপনি যদি এন্ড্রয়েড মোবাইল ব্যবহার করেন তাহলে ঘরে বসে নিজে নিজে লাইফ ভেরিফিকেশন এ্যাপের লাইফ ভেরীফিকেশন করতে পারবেন। এগার মাসের আগে লাইফভেরীফিকেশন করা সুযোগ নেই।
সুতরাং সম্মানিত পেনশনারগণের এ ধরনের ম্যাসেজ দেখে হিসারক্ষণ অফিসে আসার বা যোগাযোগ করার কোন দরকার নেই।
লাইফ ভেরিফিকেশন এসএমএস ?
পূর্ববর্তী লাইফ ভেরিফিকেশন অথবা ইএফটি শুরুর মাস হতে পরবর্তী এগারতম মাসে পেনশন ডাটাবেইজ এ রক্ষিত পেনশনারের মোবাইল নম্বর এ লাইফ ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত “এলার্ট এসএমএস” প্রদান করা হয়। উক্ত এসএমএস-এর মাধ্যমে পেনশনারের করণীয় বিষয়ে দিক নির্দেশনা প্রদান এবং এ্যাপের মাধ্যমে ভেরিফিকেশনের জন্য ইপিপিও নম্বর সরবরাহ করা হয়।
পেনশনার ভেরিফিকেশন অ্যাপ থেকে আরও যে সকল সেবাসমূহ পাবেন
- পেনশন তথ্য
- যোগাযোগ
- সচরাচর জিজ্ঞাসা
‘পেনশনার ভেরিফিকেশন’ অ্যাপ কিভাবে পাবেন ?
গুগল প্লে-স্টোর হতে “Pensioner Verification” অ্যাপটি মোবাইল ফোনে ইনস্টল করুন বা QR Code টি স্ক্যান করুন
আরও জানুনঃ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারিদের জন্য মহার্ঘ ভাতা থাকছে না বিশেষ ইনক্রিমেন্ট ২০২৩ ?
ব্যাংক একাউন্ট ও মোবাইল নম্বর পরিবর্তনে করণীয় ?
- যে পে-পয়েন্ট হতে পেনশন-ভাতাদি প্রদান করা হচ্ছে সে পে-পয়েন্ট বরাবর আবেদন করুন
- আপনার আবেদনের ভিত্তিতেই শুধুমাত্র এ তথ্য পরিবর্তন করা হয়ে থাকে • মনে রাখা প্রয়োজন, এ দুটি তথ্য পরিবর্তনে আপনার সম্মতি নিশ্চিতকরণে আপনার মোবাইলে OTP প্রেরণ করা হয়ে থাকে
মোবাইল নম্বর পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নতুন নম্বরটি অবশ্যই আপনার নামে রেজিস্টার্ড হতে হবে
আরও জানুনঃ ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ৯ম পে স্কেল এবং মহার্ঘ ভাতা সহ ১১ দফা দাবি সরকারি কর্মচারীদের ?
আপনার পরিবারে কি কোনো প্রতিবন্ধী সন্তান আছে?
পেনশন সহজীকরণ আদেশ ২০২০ অনুযায়ী, আপনার প্রতিবন্ধী সন্তানাদির তথ্য পেনশন মঞ্জুরকারী কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই অবহিত করতে হবে নতুবা আপনার প্রতিবন্ধী সন্তানের পারিবারিক পেনশন মঞ্জুর এর ক্ষেত্রে বিধিগত জটিলতা তৈরি হবে।
শেষ কথাঃ আপনি পেনশনভোগী সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারি হলে অবশ্যই আপনাকে ১১ ( এগার) মাস পরপর লাইফভেরী ফিকেশন করতে হবে। সেটা Pensioner Life Verification App মাধ্যমে হোক অথবা হিসাবরক্ষণ অফিসে উপস্থিত হয়ে লাইফভেরীফিকেশন করা হোক। অন্যথায় আপনার মাসিক পেনশন বন্ধ হয়ে যাবে।
আমি বাংলাদেশ সরকারের অডিট এন্ড একাউন্টস বিভাগের একজন কর্মচারি। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে কর্মরত থাকায় বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শেয়ার করে থাকি। তারপরও যে কোন ভুল ত্রুটি হলে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কোন পরামর্শ থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।