সরকারি ব্যয়হ্রাস ও বিদেশভ্রমন সীমিতকরণ নীতি ২০২৪ ?
সরকারি ব্যয় হ্রাস ও বিদেশভ্রমন সীমিতকরণ ২০২৪ ?
সারা বিশ্বের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে সরকারি ব্যয়হ্রাস ও বিদেশভ্রমন সীমিতকরণ জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন বিভাগ, বিভিন্ন ধরণের প্রতিষ্ঠান এবং আওতাধীন অধিদপ্তর/পরিদপ্তর/দপ্তর/স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, পাবলিক সেক্টর কর্পোরেশন এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানীসমূহের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে কতিপয় খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে সরকারি ব্যয়হ্রাস ও বিদেশভ্রমন সীমিতকরণ নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেঃ
- চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে পরিচালন বাজেটের আওতায় নিম্নবর্ণিত অর্থনৈতিক কোডসমূহে প্রদর্শিত বরাদ্দ নিম্নোক্তভাবে ব্যয় করা যাবে:
- চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে পরিচালন বাজেটের আওতায় সকল ধরনের থোক বরাদ্দ (কোড নং ৩৯১১১১১ ও 4911111 ) হতে ব্যয় বন্ধ থাকবে;
- ‘৩২১১১১৩-বিদ্যুৎ’, ‘৩২৪৩১০১-পেট্রোল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট’ ও ‘3243102-গ্যাস ও জ্বালানি’ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৮০% ব্যয় করা যাবে;
- পরিচালন বাজেটের আওতায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট স্থাপনা ব্যতীত নতুন আবাসিক (৪১১১১০১)/অনাবাসিক (৪১১১২০১)/অন্যান্য ভবন স্থাপনা (4111317) নির্মাণ বন্ধ থাকবে। তবে চলমান নির্মাণ কাজ ন্যূনতম ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে খরচ করা যাবে।
- সকল ধরনের যানবাহন ক্রয় (‘৪১১২১০১ মোটরযান’, ‘৪১১২১০২-জলযান’, ‘৪১১২১০৩- (‘৪১১২১০১-মোটরযান’, আকাশযান’) খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে। তবে, ১০ বছরের অধিক পুরোনো টিওএন্ডইভুক্ত যানবাহন প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদনক্রমে ব্যয় নির্বাহ করা যাবে;
- ‘৪১৪১১০১-ভূমি অধিগ্রহণ’ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে উন্নয়ন বাজেটের আওতায় নিম্নবর্ণিত অর্থনৈতিক কোডসমূহে প্রদর্শিত বরাদ্দ নিম্নোক্তভাবে ব্যয় করা যাবে:
- বিদ্যুৎ’, ‘পেট্রোল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট’ ও জ্বালানি’ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৮০% এর ব্যয় অর্থ করা যাবে না;
- সরকারি বিভিন্ন অফিসের যানবাহন কেনা-কাটা, জলযান’,আকাশযান’ মোটরযান’, ক্রয় করা যাবে না;
- বিভিন্ন সরকারি কাজে ভূমি অধিগ্রহণের দরকার হলে অর্থমন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে;
- পরিকল্পনা কমিশনের অনুকূলে ‘বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা’ খাতে জিওবি বাবদ সংরক্ষিত এবং মন্ত্রণালয়/বিভাগের অনুকূলে ‘থোক বরাদ্দ’ হিসেবে সংরক্ষিত জিওবি’র সম্পূর্ণ অংশ অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন গ্রহণ সাপেক্ষে ব্যয় করা যাবে।
- সরকারের নিজস্ব অর্থে সকল প্রকার বৈদেশিক ভ্রমণ/ওয়ার্কশপ/সেমিনারে অংশগ্রহণ বন্ধ থাকবে। তবে, অত্যাবশ্যকীয় বিবেচনায় সীমিত আকারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে বিদেশ ভ্রমণ করা যাবে;
- পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সরকারি অর্থায়নে এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা/বিশ্ববিদ্যালয়/দেশ কর্তৃক প্রদত্ত স্কলারশীপ/ফেলোশীপ-এর আওতায় বৈদেশিক অর্থায়নে মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নের নিমিত্ত বিদেশ ভ্রমণ;
- সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারিগণ বিভিন্ন বিদেশী সরকার, সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং উন্নয়ন সহযোগীর আমন্ত্রণে ও অর্থায়নে আয়োজিত বিদেশী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করা যাবে ;
- Pre-shipment Inspection (PSI ) / Factory Acceptance Test (FAT)-এর আওতায় বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি-এর ২ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখের ০১ নম্বর স্মারকে জারিকৃত পরিপত্র কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। তবে, একান্ত অপরিহার্য বিবেচনায় PSI/FAT-এর আওতায় বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
- সারা বিশ্বে কভিড সংক্রমণের পর থেকেই সরকার সরকারি ব্যয় হ্রাস ও বিদেশভ্রমন সীমিতকরণ নীতি অনুসরণ করা শুরু করেছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পর সারা বিশ্বের ডলার সংকট শুরু হয়। বাংলাদেশেও ডলার সংকট তীব্র আকার ধারণ করে এটি প্রেক্ষিতে সরকার ব্যয় সংকোচন নীতি প্রয়োগে আরো কঠোর হয়।
- ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয় । ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে কত টাকা সাশ্রয় হয়েছে তার হিসাব সুনির্দিষ্ট ভাবে এখনো জানা সম্ভব হয়নি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেটের সংক্ষিপ্ত আকারে বলা হয়েছে সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে ।
আমি বাংলাদেশ সরকারের অডিট এন্ড একাউন্টস বিভাগের একজন কর্মচারি। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে কর্মরত থাকায় বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শেয়ার করে থাকি। তারপরও যে কোন ভুল ত্রুটি হলে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কোন পরামর্শ থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।