বন্ধ্যত্য এবং প্রেগন্যান্সি

 গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা এবং গর্ভবতী মায়ের খাবার ?

Table of Contents

Toggle

গর্ভবতী মায়ের খাবার ও  গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা ?

গর্ভবতী-মায়ের-খাবার-তালিকা-গর্ভবতী-মায়ের-খাবার

শরীরের বৃদ্ধি, ক্ষয়পূরণ এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যবহৃত শক্তির জোগান দেওয়ার জন্যই আমরা খেয়ে থাকি। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে সারাজীবনই সুষম (Well balanced) খাবার খাওয়া প্রয়োজন । সুষম খাবার বলতে আমরা ঐ খাবারই বুঝি যাতে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় আমিষ, চর্বি, শর্করা, খাদ্যপ্রাণ ও খনিজদ্রব্য থাকে । একটু যত্নবান হলেই আমাদের পক্ষে প্রতিদিন সুষম খাবার খাওয়া সম্ভব । আর গর্ভাবস্থায় এই সুষম খাবার খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা বলাই বাহুল্য । একটা শিশু তার শরীর গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত উপাদান তার মায়ের কাছ থেকেই পেয়ে থাকে । মা যদি সুষম খাবার খান তবেই শিশুর দেহ সঠিকভাবে গড়ে উঠতে পারে ।

গুগল নিউজ হতে আপডেট ” নিউজ হতে আইবাস++ ও সরকারি নিউজের আপডেট সংগ্রহ করে নিতে পারেন।

মাছ, মাংস, ডিম ও দুধই আমিষের প্রধান উৎস । প্রতিদিন আধা কেজি দুধ খেলে ভালো হয় । দুধে আমিষ, ক্যালসিয়াম ও কয়েক প্রকার ভিটামিন থাকে । অনেকে হয়তো দুধকে সরাসরি দুধ হিসেবে খেতে পারেন না। এতে কোন অসুবিধার কারণ নেই । দুধ দিয়ে দই, পুডিং, ফাস্টফুড ইত্যাদি তৈরি করে খেলে এর গুণাবলীর তেমন কোন পরিবর্তন হয় না ।

মাছ, মাংস ও ডিমে আমিষ ছাড়াও বিভিন্ন খাদ্যপ্রাণ ও খনিজ দ্রব্য থাকে । দিনে অন্তত দুবার এদের যে কোনটি খাওয়া দরকার । সব ধরনের মাংসেই লৌহ থাকে । তাবে যকৃত, কিডনি ও হৃৎপিণ্ডে প্রচুর লৌহ থাকে । তৈলাক্ত মাছে প্রচুর ভিটামিন ডি থাকে ।

গর্ভাবস্থায় অবশ্যই প্রচুর শাক-সবজী বিশেষভাবে সবুজ শাক, যেমন পুঁই শাক, পালং শাক ইত্যাদি খাওয়া প্রয়োজন । শাক-সবজীতে ভিটামিন ও সি ভিটামিন থাকে । এ ছাড়া শাক খেলে কোষ্ঠবদ্ধতা থেকে প্রচুর মুক্তি পাওয়া যায় । গাজর ও কচুর শাকে প্রচুর ভিটামিন এ থাকে । পেয়ারায় প্রচুর ভিটামিন সি থাকে । লেবু ও কমলালেবুতেও ভিটামিন সি থাকে ।

গর্ভাবস্থায় সুসম খাবার জরুরী ?

ভাত শর্করাজাতীয় খাদ্য উপাদানের প্রধান উৎস । গোলআলুতেও প্রচুর শর্করা থাকে । শর্করাজাতীয় খাবার প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয় । কারণ এতে মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।

এখন প্রশ্ন হলো, আমাদের দেশে যেখানে অধিকাংশ লোক দারিদ্রসীমার নিচে জীবন যাপন করে, তাদের পক্ষে কি সুষম খাবার খাওয়া সম্ভব? হ্যাঁ, তাদের পক্ষেও সহজেই সুষম খাবার খাওয়া সম্ভব । প্রথমে আমিষের কথাই ধরা যাক । কারণ আমিষ আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং আমিষ জাতীয় খাবারগুলো বেশি দামের হয়ে থাকে । মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ছাড়াও সস্তায় আমিষের অনেক উৎস আমাদের দেশে আছে । যেমন- ডাল, শীম ইত্যাদি । ডালকে গরিবের আমিষ বলা হয় । এ ছাড়া গুঁড়া বা মলা-ঢেলা মাছেও বড় মাছের মতোই আমিষ থাকে । আর শাক-সবজী তো আমাদের দেশে প্রচুর পাওয়া যায় । সুতরাং দেখা গেল যে, একটু সচেতন হলেই অল্প খরচে সুষম খাবার খেয়ে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া যায় ।

গর্ভস্থ সন্তানের সঠিক বৃদ্ধির জন্য আয়োডিনের বিশেষ প্রয়োজন । সামুদ্রিক মাছে প্রচুর আয়োডিন থাকে । যে সব এলাকায় সামুদ্রিক মাছ নেই সেই সব এলাকার মায়েরা আয়োডিনযুক্ত লবণ খেয়ে সহজেই আয়োডিনের চাহিদা মেটাতে পারেন ।

আরও জানুনঃ গর্ভবতী মায়ের যত্ন কি কি এবং গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের সতর্কতা ? গর্ভবতী মায়ের কি কি চেকআপ করা দরকার ?

গর্ভাবস্থায় বেশি খেলে বাচ্চা বড় হয়ে যায় এতে কি বাচ্চা প্রসব হওয়ার সময় কি সমস্য হয় ?

গর্ভবতী মায়েদের খাবার সম্বন্ধে আমাদের দেশে একটি কুসংস্কার প্রচলিত আছে । তা হলো, গর্ভাবস্থায় বেশি খেলে বাচ্চা বড় হয়ে যায় ; আর এতে সন্তান জন্মের সময় মায়ের খুব কষ্ট হয় এবং সিজারিয়ান ডেলিভারির প্রয়োজন পড়ে । এ ধারণা সম্পূর্ন ভুল । মাকে খাবার কম দিলে মায়ের শরীরের ক্ষতি হয়। ক্ষতি হতে পারে তার বাচ্চারও । বাচ্চা খুব ছোট এবং দুর্বল হতে পারে । এই ধরনের বাচ্চাদের জন্মের প্রথম কয়েক মাসের মধ্যে অনেক সমস্যা এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকিও বেশি থাকে । গর্ভাবস্থায় মায়ের খাবারের পরিমাণ খুব বেশি বাড়ানোর প্রয়োজন নেই, শুধু খাবার সুষম হতে হবে ।

গর্ভবতী মায়ের কি কি খাওয়া উচিত নয় ? গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার ?

না ধোয়া ফল এবং সবজি:

  • গর্ভাবস্থায় না ধোয়া ফল তার সাথে সবজি খাওয়া যাবে না। কেননা না ধোয়া ফল এবং সবজির খোসাগুলিতে শুধুমাত্র ক্ষতিকারক কীটনাশক থাকতে পারে , সেগুলো টক্সোপ্লাজমা গন্ডি তার সাথে লিস্টেরিয়ার মতো মারাত্মক প্যাথোজেনদেরও বসতি হয়।
  • গর্ভকালিন অবস্থায় বাধাকপি,লেটুস ও স্প্রাউট এবং পানি দিয়ে পরিষ্কার না করে কাঁচা শাকসবজি।
  • এছাড়া ফ্রিজে দীর্ঘদিন ফলমূল রেখে কোনোভাবেই খাওয়া যাবে না। তার সাথে পাতাওয়ালা সবজি বহু বেশি করে ক্লিয়ার পানি দিয়ে ধুয়ে রান্না করবেন।

আনারস:

  • আনারস অতীব সুস্বাদু একটি ফল। আনারসে ব্রোমালিন নামক এক ধরনের উপকরণ থাকে যা গর্ভের সন্তানের ক্ষতির কারণ হয়।

করলা:

  • করলাতে গ্লাইকোলাইসিস, সেপনিক, মারোডিসিন নামক ক্ষতিকর পদার্থ থাকে যা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী তার সাথে গর্ভজাত সন্তানের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ছবি

১ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

১ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ?

১ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা:

গর্ভাবস্থার ১ম মাসের মধ্যে গর্ভবতী মা যে খাদ্য খান, তা গর্ভের অনাগত সন্তানের বেড়ে ওঠাকে সরাসরিভাবে প্রভাবিত করে থাকে। গর্ভাবস্থার উপসর্গগুলো গর্ভাবস্থার আড়াই সপ্তাহ পরেই লক্ষনীয় হয়ে ওঠে।

১. দুগ্ধজাত পণ্য


দুগ্ধজাত পণ্য, বিশেষ করে ফোর্টিফাইড দ্রব্যাদি ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি তার সাথে ফলিক এসিডের ১টি দারুণ উৎস। ১ মাসের গর্ভবতী মায়ের আহার তালিকায় দুধ ও টকদই যোগ করা যেতে পারে।

২. ফোলেট পুষ্ট খাবার


ভ্রুণের প্রাইমারি বিকাশের সময়, ফলিক এসিড নিউরাল টিউব গঠনে সহযোগিতা করে। ফলিক এসিড খুবই জরুরি কারণ এটা শিশুর (এনেনসেফালি) তার সাথে মেরুদন্ডের (স্পাইনা বিফিডা) কিছু বড় জন্মগত দোষ প্রতিরোধ করার জন্য হেল্প করে। আপনি ফোলিক এসিড সম্পূরক ( সাপ্লিমেন্ট) গ্রহণ করলেও আপনার খাদ্যতালিকায় ফোলেট উন্নত আহার যোগ করা গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরণের খাবারের উদাহরণ হলো টকজাতীয় বা সাইট্রাস ফল, মটরশুঁটি, মটর, মসুর ডাল, চাল তার সাথে ফোর্টিফাইড সিরিয়াল জাতীয় খাবার।

৩. Whole grain or whole grains জাতীয় খাবার :



গোটা শস্য জাতীয় খাবারগুলো কার্বোহাইড্রেট, ডায়েটারি ফাইবার, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স তার সাথে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও সেলেনিয়ামের মতো খনিজ পদার্থের স্বাস্থ্যকর উৎস। গর্ভের শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের জন্য এগুলো অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান। হোল গ্রেইনের নমুনা হলো যব, বাদামী চাল, বাজরা, ওটমিল ইত্যাদি।

৪. ডিম ও মুরগি:


ডিমে প্রোটিন, ভিটামিন এ, বি২, বি৬, বি১২, ডি, ই, কে তার সাথে ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও জিংক রয়েছে। হাঁস মুরগি প্রোটিনের চমৎকার উৎস। একসাথে ভিটামিন বি, জিংক ও আয়রন ও থাকে।

৫. মাছ:

মাছে কম চর্বিযুক্ত এবং উচ্চমানের প্রোটিন রয়েছে। It is an easily available and excellent source of Omega-3 fatty acids, vitamins B2, D, E and essential minerals like potassium, calcium, zinc, iodine, magnesium, phosphorus.

৬. শাকসবজি:


গর্ভবতী মায়ের আহার তালিকায় Broccoli, spinach, carrots, pumpkin, sweet potatoes, tomatoes, corn, eggplant, cabbage.

৭. বাদাম ও বীজ:


বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবারে রয়েছে স্বাস্থ্যকর Fats, vitamins, proteins, minerals, flavonoids and dietary fiber।

৮. কড লিভার ওয়েল:


কড লিভার ওয়েল ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার, যা ভ্রূনের এবং চোখের বিকাশের জন্য অপরিহার্য। এতে ভিটামিন ডি ও থাকে, যা প্রিক্ল্যাম্পশিয়া প্রতিরোধে সহায়ক।

আরও জানুনঃ অ্যামনিওটিক ফ্লুইড কি ? অ্যামনিওটিক ফ্লুইড এর কাজ কি ? গর্ভফুল কি ? গর্ভবতী কত দিন পর সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় ?


৯. আয়োডিনযুক্ত লবণ



গর্ভাবস্থায় একমাত্র আয়োডিনযুক্ত লবণ প্রয়োগ করুন। আয়োডিন গর্ভের শিশুর স্নায়ুতন্ত্র ও মস্তিষ্কের ঠিক বিকাশে সহায়তা করে।

গর্ভাবস্থার প্রথম মাসের মধ্যে আপনার দেহে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে। হরমোনগত কারণে আপনার স্বাভাবিক মেজাজের পরিবর্তন, ক্লেশ তার সাথে ভোরে সাময়িক অসুস্থবোধ হতে পারে। নিত্য বিরতিতে স্বাস্থ্যকর খাদ্য খান, প্রচুর জল পান করুন, হালকা ব্যায়াম করুন তার সাথে মানসিক চাপমুক্ত থাকুন।

২ ( দ্বিতীয় ) মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ?

 


২ মাসের গর্ভবতী মা সকালের অসুস্থতা এবং বমি বমি ভাবের কারণে অস্বস্তিবোধ করতে পারেন। এই পর্যায়ে পুষ্টিকর অন্ন খাওয়া জরুরি কারণ এটি ভ্রূণের ঠিক বিকাশে সহায়তা করে। এই সময়ে ভ্রূণের নিউরাল টিউব হয়, যা পরে মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ড ও স্নায়ুতে হয়। ২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকায় যা যা অধিভুক্ত করা যেতে পারে তা নিম্নে দেওয়া হলোঃ

১. ফলিক এসিড


প্রথম ত্রৈমাসিকে ফলিক অ্যাসিড উন্নত খাদ্য অনাগত শিশুকে নিউরাল টিউবের ভ্রান্তি হতে রক্ষা করার জন্য সাহায্য করে। সবুজ শাকসবজি, ডিম, আখরোট, মসুর ডাল ইত্যাদি হলো গর্ভবতী মায়ের জন্য ফলিক অ্যাসিডের পুষ্ট প্রাকৃতিক সম্পূরক।

আরও জানুনঃ গর্ভাবস্থায় বা প্রেগনেন্ট হলে নারীর শরীরের পরিবর্তন বা লক্ষণ দেখা যায় ?

২. আয়রন


২ মাসের গর্ভবতী মায়ের অন্ন তালিকায় আয়রন ১টি অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান। এই পর্যায়ে একজন গর্ভবতী মায়ের শক্তিশালী রক্ত প্রবাহের প্রয়োজন হয়। ২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় পালংশাক, মেথি, বিটরুট, মুরগি, ডিম প্রভৃতি যোগ করুন।
৩. ক্যালসিয়াম
২ মাসের গর্ভবতী মায়ের আহার তালিকায় ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ আহার যোগ করা অতীব গুরুত্ববহ। এই পর্যায়ে যদি শরীরে প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম এর যোগাড় না হয়, তাহলে গর্ভবতী মায়ের অস্টিওপোরোসিস হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। শালগম, বাধাঁকপি, শাকসবজি ক্যালসিয়াম এর বেশ ভালো উৎস।
৪. প্রোটিন
গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই প্রোটিন অপরিহার্য। ২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকায় মুরগি, ডিম, দুধ, মাছ, মসুর ডাল থাকে তাহলে তা প্রয়োজনীয় প্রোটিন সরবরাহ করবে।
৫. জিংক
অ্যাসিড বিপাক তার সাথে জৈবিক কার্যকলাপের জন্য জিংক এর প্রয়োজন। মুরগি, মাছ, শাকসবজি, মটরশুঁটি সবই জিংকের সমৃদ্ধ উৎস। শিওর করুন যে, ২ মাসের গর্ভবতী মায়ের অন্ন তালিকায় এগুলো অন্তর্ভুক্ত আছে।


৬. চর্বি

খাঁটি ঘি ও খাঁটি সরিষার তেলে এর ন্যায় স্বাস্থসম্মত ভ্রুণ এর আই, ব্রেন ও placenta, tissue  গঠনে সাহায্যে করে ।

৭. ফাইবার
ফাইবার জাতীয় খাদ্য হজমে সহযোগিতা করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। গাজর, বাঁধাকপি, সিরিয়াল, কলা, কমলা ইত্যাদি ২ মাসের গর্ভবতী মায়ের আহার তালিকায় যোগ করলে তা রক্তচাপ বজায় রাখতে তার সাথে গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সহায়তা করবে।

৩ ( তৃতীয়)  মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ?


গর্ভাবস্থার তৃতীয় মাস (৯ হতে ১২ সপ্তাহ) মায়ের জন্য একটি দৃঢ় সময় হতে পারে কারণ এই সময়ে সকালের অসুস্থতা, দুঃখ তার সাথে মেজাজের পাল্টানো বা মুড সুয়িং অতিমাত্রা বেড়ে যায়। এই সময়েই সবচেয়ে বহু গর্ভপাতের সংবাদ পাওয়া যায়। এইজন্য এই সময়ে মায়ের মানসিক চাপমুক্ত থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ৩ মাসের গর্ভবতী মায়ের অন্ন তালিকায় এরূপ সব খাবার রাখতে হবে যা ভ্রুণের সুস্থ বৃদ্ধি ও প্রচার শিওর করবে।
১. ভিটামিন বি-৬ সমৃদ্ধ খাবার
ভিটামিন বি-৬ বমিবমি ভাব এবং বমি প্রতিরোধে সহায়তা করে। ভিটামিন বি-৬ পুষ্ট খাদ্যের ভিতরে বিদ্যমান চর্বিহীন মাংস, হাঁস, মুরগি, সাইট্রাস ফল, সয়াবিন, বাদাম, বীজ ও অ্যাভোকাডো।
২. ফোলেট সমৃদ্ধ খাবার
শিশুর মগজ ও মেরুদন্ডের সঠিক বিকাশের জন্য ৩ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকায় নিশ্চয়ই ফোলেট পুষ্ট খাবারের প্রাকৃতিক সোর্স যোগ করার জন্য হবে।
৩. ওমেগা-৩ উন্নত খাবার

Soybean, canola oil, walnuts, chia seeds, flax seeds etc.

আরও জানুনঃ ডায়াবেটিস কি ? ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় বা ডায়াবেটিস কমানোর উপায় ?


৪. টাটকা ফল
ফলের মধ্যে প্রচুর হিসাবে পুষ্টি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শিশুর সুস্থ বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য অপরিহার্য। ৩ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় অ্যাভোকাডো, ডালিম, কলা, পেয়ারা, কমলা, আপেল, স্ট্রবেরি রাখতে পারেন।
৫. শাকসবজি
৩ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় ভিন্ন রং এর সবজি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য হবে যাতে গর্ভবতী মা বিস্তৃত পরিসরে পুষ্টি উপাদানগুলো পান। পালংক শাক, ব্রোকলি, মিষ্টি আলু, টমেটো, গাজর, কুমড়া, ভুট্টা, বেগুন, বাঁধাকপি প্রভৃতি গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকায় রাখা যেতে পারে।
৬. কার্বোহাইড্রেট
কার্বোহাইড্রেট দেহের জন্য শক্তি যোগায়। কঠোর শর্করা পাওয়া যায় শস্যে। আলু ও মিষ্টি আলুতে স্টার্চ থাকে, যা গর্ভবতী মায়ের শরীরের জন্য ভালো।
৭. প্রোটিন
ভ্রুণের নির্ভুল বিকাশের জন্য গর্ভবতী মায়ের আহার তালিকায় অবশ্যই আমিষ জাতীয় খাদ্য রাখতে হবে।
৮. দুগ্ধজাত পণ্য

Calcium কাজ করে থাকে হাড় গঠনে । তিন মাসে প্রেগনেন্ট মহিলার খাবারে মেন্যুতে মিল্ক, পনির জাতীয় খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে।

৯. ভিটামিন ডি
ভিটামিন ডি ইমিউন সিস্টেমের বিকাশ, সুস্থ হাঁত ও হাড়ের প্রচার তার সাথে শিশুর স্বাভাবিক কোষ বিভাজনে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন ডি পুষ্ট খাদ্য হলো স্নেহ জাতীয় মাছ, ডিমের কুসুম, কড লিভার ওয়েল ইত্যাদি।

আরও জানুনঃ গর্ভবতী মায়ের যত্ন কি কি এবং গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের সতর্কতা ? গর্ভবতী মায়ের কি কি চেকআপ করা দরকার ?

৫ (পঞ্চম) মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ?


গর্ভধারণের ৫ম মাসের মধ্যে (১৭ হতে ২০ সপ্তাহ), আপনাকে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩৪৭ এক্সট্রা ক্যালরি গ্রহণ করার জন্য হবে তার সাথে প্রায় এক বা দুই পাউন্ড ওজন বাড়াতে হবে। এই ক্যালোরি আমিষ ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য হতে আসা উচিত।
৫ মাসের গর্ভবতী মায়ের অন্ন তালিকায় যেসব খাদ্য অধিভুক্ত করতে হবে-
১. আমিষ সমৃদ্ধ খাবার।
২. গোটা শস্য বা হোল গ্রেইন

গোটা শস্যে প্রচুর পরিমাণে magnesium, iron, vitamin E along with vitamin B complex.

৩. ক্যালসিয়াম উন্নত খাবার
৪. শ্রেষ্ঠ ফাইবার উন্নত খাবার
৫. সালাদ
৬. ফল ইত্যাদি
৭ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকা
৭ মাসের গর্ভবতী মায়ের আহার তালিকা
গর্ভাবস্থার ৭ম মাসে আপনার দেহ ও আপনার গর্ভের ছোট বাচ্চা নানাবিধ বদলানোর মধ্য দিয়ে যায়। আপনার গর্ভাবস্থা যাতে নির্ভুলভাবে অগ্রসর হয়, তা শিওর করতে আপনাকে ১টি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস বজায় রাখতে হবে। শরীর বিশেষজ্ঞরা অন্তত এক্সট্রা ৪৫০ ক্যালরির সুপারিশ করে থাকেন। তবে আপনাকে অবশ্যই পরিমিতভাবে খেতে হবে। অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন।

আরও জানুনঃ গর্ভাবস্থায় যে সব ভিটামিন খাওয়া যাবে না এবং কোন ভিটামিন খাওয়া যাবে ?

৭ (সপ্তম) মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ?

৭ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় তলে উল্লেখিত আহার থাকা জরুরিঃ
১. আয়রন ও প্রোটিন পুষ্ট খাবার
২. ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
৩. ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
৪. ডি এইচ এ পুষ্ট খাবার
ডি এইচ এ এক প্রকারের ফ্যাটি এসিড, যা গর্ভের শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে। মাছের তেল, স্নেহ জাতীয় মাছ, আখরোট, ফ্লাক্স বীজে ডি এইচ এ থাকে।
৫. ফলিক অ্যাসিড পুষ্ট খাবার
৬. ফাইবার উন্নত খাবার
৭. ভিটামিন সি উন্নত খাদ্য ইত্যাদি

৯ মাসের গর্ভবতী মায়ের আহার তালিকা ?


আরও জানুনঃ কিভাবে বুঝবেন আপনার বাচ্চা সুস্থ আছে ? ৩ মাসের গর্ভবতী বাচ্চা কতবার নড়াচড়া করে ?পেটে বাচ্চা নড়াচড়া না করলে করনীয় ?

গর্ভাবস্থার নবম মাসে আপনার যতটা সম্ভব বিশ্রাম করা উচিত। তৃতীয় ত্রৈমাসিকে আপনার খাবার ও জীবনধারা আপনার ও আপনার শিশুর উভয়ের স্বাস্থ্যের উপর ইফেক্ট ফেলে। নবম মাসের মধ্যে ১ম ও দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের মতো স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন। ৯ মাসের গর্ভবতী মায়ের আহার তালিকায় যা যা থাকা প্রয়োজনঃ
১. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার
২. ক্যালসিয়াম উন্নত খাবার
৩. আয়রন উন্নত খাবার
৪. ভিটাসিন সি উন্নত খাবার
৫. ফলিক অ্যাসিড পুষ্ট খাবার
৬. ভিটামিন এ উন্নত খাবার
সুষম অন্ন গর্ভাবস্থার সাধারণ উপসর্গ গুলো মুছে করে। একসাথে ভ্রূণের নির্ভুল বিকাশও শিওর করে। ৯ মাসের গর্ভবতী মায়ের আহার তালিকায় স্ট্রবেরি ও কমলার মতো তাজা ফল, টাটকা সবজি যেমন টমেটো, ফুলকপি, মটরশুঁটি, মিষ্টি আলু, গাজর, আস্ত শস্য, মসুর ডাল, দুগ্ধজাত পণ্য উদাহরণসরূপ পনির, দই, ডিম, মুরগি, মাছ, পালংক শাক, বাদাম, কিশমিশ ইত্যাদি থাকা প্রয়োজন।

রিলেটেড ট্যাগঃ  গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা এবং গর্ভবতী মায়ের খাবার ?, গর্ভাবস্থায় সুসম খাবার জরুরী ?, গর্ভবতী মায়ের কি কি খাওয়া উচিত নয় ?, গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার ?, ১ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ?, ২ ( দ্বিতীয় ) মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ?, ৩ ( তৃতীয়)  মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ?, ৫ (পঞ্চম) মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ?, ৭ (সপ্তম) মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ?, ৯ মাসের গর্ভবতী মায়ের আহার তালিকা ?

Recent Posts

এটিও/টিও এবং উপজেলা/থানা রিসোর্স সেন্টারের সহকারী ইন্সট্রাক্টরগণের  ভ্রমন ভাতা বৃদ্ধির গেজেট ২০২৪ ?

এটিও/টিও এবং উপজেলা/থানা রিসোর্স সেন্টারের সহকারী ইন্সট্রাক্টরগণের  ভ্রমন বিল বৃদ্ধির ভ্রমণ ভাতা গেজেট ২০২৪ ?…

4 days ago

নবম পে স্কেল ২০২৪ সহ ৭দফা দাবিসমূহ কি কি ?নবম পে স্কেলের সর্বশেষ খবর ২০২৪ ?

দ্রব্যমূল্যে উর্ধগতির কারণে জীবনযত্রার ব্যয় বৃদ্ধির ফলে সরকারি কর্মকর্ত/কর্মচারিদের বেতন বৃদ্ধির দাবি দীর্ঘ দিনের ।…

2 weeks ago

প্রাথমিক সহকারি শিক্ষকদের নিয়োগ ২০২৩ সালের তয় ধাপের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ।

রাজস্বখাতভুক্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের “সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩” এর তৃতীয় ধাপরে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল ২০২৪…

4 weeks ago

এমপিওভুক্ত স্কুল শিক্ষকদের বেতন ও ভাতাদি কত ২০২৪ ?

সারা দেশে অসংখ্য বেসরকারি এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে। এসব বেসরকারি এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক,…

1 month ago

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকদের বেতন গ্রেড এবং বেতন কত ২০২৪ ?

বাংলাদেশে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা কত ? বাংলাদেশে শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী…

2 months ago

ঈদুল ফিতর এর কতদিন থাকছে ২০২৪ সালে সরকারি ছুটি ?

পোস্ট সামারীঃ কতদিন থাকছে  ঈদুল ফিতর ২০২৪ সালে সরকারি ছুটি ? ঈদুল ফিতর ২০২৪ সরকারি…

2 months ago