২০২৩-২৪ সালের বাজেটে টিসিবির ভুর্তির পরিমাণ বাড়ছে ? টিসিবির পণ্য বিক্রয় ও কার্ডধারী সংখ্যা বাড়বে ?
টিসিবির পণ্য বিক্রয় ?
নিম্ন রোজগারের কোটি ফেমেলির হাতে খাদ্য সাহায্য পৌঁছে দিতে আসন্ন বাজেটে রাষ্ট্রীয় এজেন্সি টিসিবিকে বড় অঙ্কের ভর্তুকি দেওয়া হবে। ভর্তুকির পরিমাণ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছে অর্থবিভাগ। রানিং ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ খাতে অর্থবিভাগ হতে ভর্তুকি বাবদ ৯০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল বাজার ও কান্ট্রিতে ভোগ্যপণ্যের মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে আগামী বাজেটে ভর্তুকির সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। ইতোমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে দরকারী উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করা হয়। এছাড়া টিসিবির সাহায্যে আধুনিক কোটি পরিবার খাদ্য সহাযতা পেলেও আগামী বাজেটে উপকারভোগীর পরিমান বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। সেক্ষেত্রে ভর্তুকির হিসাব আরও বাড়বে।
নিউজ হতে আইবাস++ ও সরকারি নিউজের আপডেট সংগ্রহ করে নিতে পারেন।
জানা গেছে, আসন্ন বাজেটে বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল তার সাথে গ্যাসে নিউ করে আর ভর্তুকি দেওয়া হলো না। তবে সাধারণ মানুষকে সস্তায় খাদ্যপণ্য দেওয়ার জন্য সরকারী বাজার পরিচালনাকারী সংগঠন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি), কৃষি উদ্ভাবন বাড়াতে সার আমদানিতে ভর্তুকি এবং রপ্তানি বাড়াতে নগদ সাহায্য ও প্রণোদনা দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে টিসিবির কার্যক্রম বাড়াতে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। কোটি পরিবারের হাতে ভর্তুকি মূল্যে খাবার সহায়তা দেওয়া হলেও এ থেকে উপকৃত হচ্ছেন প্রায় ৫ কোটি মানুষ। এতে করে গ্রামাঞ্চলের অতি নির্বিত্ত মানুষের পরিমান কমে যায় আসছে। যদিও টিসিবির কার্ড বিতরণে কতিপয় অনিয়ম ওঠায় পুরো সিস্টেমটিকে ডিজিটালাইজেশন করার উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। টিসিবির পণ্য বিক্রয় করে অনিয়ম কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছরের মধ্যে আধুনিক কার্ড পেয়ে যাবেন উপকারভোগী প্রত্যেকটি পরিবার। এতে করেও টিসিবির পরিচালন খরচা এইরকম বাড়বে। এছাড়া নিউ নতুন গুদাম নির্মাণ, টিসিবির আঞ্চলিক অফিস স্থাপনসহ সেবার পরিধি বাড়ার ফলে সংস্থাটির পরিচালন ব্যয়ও প্রতিবছর বাড়ছে।
আরও জানুনঃ লাইফ ভেরিফিকেশন কী ? Pensioner Life Verification App ? লাইফ ভেরিফিকেশন এখন আপনার হাতের মুঠোয়
জানা গেছে, টিসিবির কার্যক্রম বাড়ানো এবং এ খাতে অনেক হিসাবে বাজেট দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। সারাদেশের নিম্ন রোজগারের কোটি পরিবারকে টিসিবির অন্ন সহায়তার এই উদ্যোগটি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এ কারণে আসন্ন বাজেটে এ বিষয়ে বিশেষ ঘোষণা দিতে পারেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেট সংক্রান্ত কিছু দিন আগে এক বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও গ্যাসে ভর্তুকি দেওয়া না হলেও সোশ্যাল নিরাপত্তায় রাষ্ট্রশাসক বিভাগ সর্বোচ্চ জোর দিচ্ছে। বিশেষ করে টিসিবির কার্যক্রম বাড়ানো, উন্মুক্ত করা মার্কেটপ্লেসে চাল, আটা বিক্রি কার্যক্রম (ওএমএস) এবং খাদ্যবান্ধক কর্মসূচির রোদের আড়াল বাড়ানো হবে। যাতে করে স্বল্প ইনকামের লোক ভোগ্যপণ্যে স্বস্তি পান। প্রধানমন্ত্রী বরাবরই দেশে কৃষি উৎপাদন বাড়তে জোর দিয়ে আসছেন। পরনির্ভরতা কাটাতে এবং দেশের নিম্ন আয়ের মানুষকে কমমূল্যে খাদ্যের যোগান দিতে বিষয়টির উপর উনি গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উনি রাষ্ট্রের প্রতিইঞ্চি স্থান আবাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
আরও জানুনঃ প্রশাসনিক ও ব্যাক্তিগত কর্মকর্তারা মহার্ঘ ভাতা নয় চান অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট ?
টিসিবির মাধ্যমে সরাসরি ভাবে এক কোটি পরিবার খাবার সহযোগিতা পাচ্ছে। প্রতিমাসে একবার করে ভোজ্যতেল, ডাল ও চিনির মতো পণ্য বাজারের প্রায় অর্ধেক দামে দেওয়া হয়। একসাথে বিশেষ বিশেষ সময়ে ছোলা, পেঁয়াজ, খেজুর এবং আলুর মতো পণ্য বিক্রি করে সংস্থাটি। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় সারাদেশের ৫০ লাখ পরিজন ১৫ টাকা মূল্যের চাল পাচ্ছেন। জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ওএমএসের স্বল্পমূল্যের চাল ও আটা কিনতে পারছে সাধারণ মানুষ। সংশ্লিষ্টদের মতে, সোশ্যাল সিকিউরিটির আওতা যত বহু বাড়ানো হবে তত উপকৃত হবেন। এর ফলে বাজারের ওপরও চাপ কমবে। এ কারণে রাষ্ট্রের এই কাজগুলো অব্যাহত রাখতে চায়। এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তায় জোর দেওয়ার বিষয়টি সর্বাপেক্ষা চমৎকার উদ্যোগ।
আরও জানুনঃ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারিদের জন্য মহার্ঘ ভাতা থাকছে না বিশেষ ইনক্রিমেন্ট ২০২৩ ?
এ ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সর্বাপেক্ষা অধিক উপকৃত হতে পারেন। নির্বিত্ত মানুষের পরিমান কমিয়ে আনতে হলে সোশাল নিরাপত্তায় যত প্রোগ্রাম আরম্ভ রয়েছে তা শুরু রাখার জন্য হবে। আগামী বাজেটে এ বিষয়ে বিশেষ স্টেপ থাকবে বলে মনে করি। জানা গেছে, বছর আগেও টিসিবি পণ্য বিক্রি করে কিছু মুনাফা করতে পেরেছে। লেটেস্ট ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সংস্থাটি নিট মুনাফা করে ২২ কোটি টাকা। কিন্তু গত অল্পসংখ্যক বছরে টিসিবির কার্যক্রম বাড়িয়ে অন্ন সাহায্য বৃদ্ধি করার ফলে এ খাতে প্রতিবছর ভর্তুকি ও লোকসানের সংখ্যা বাড়ছে। সোশাল নিরাপত্তার সবচেয়ে সুবিশাল জায়গা হলো এখন টিসিবি’র কার্যক্রম। এ প্রসঙ্গে অর্থবিভাগের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, চলতি অর্থবছরে টিসিবিকে ৯০০ কোটি অর্থের ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। তবে টিসিবি সূত্র জানিয়েছে, রানিং ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য বিক্রি করে সর্বমোট আয় হয়েছে ১ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা, প্রতিপক্ষে পণ্য ক্রয়সহ আদার্স খরচা হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। অর্থাৎ নিট মুনাফায় ঘাটতি বা লোকসান হয়ে গিয়েছে ১ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা।
আরও জানুনঃ ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ৯ম পে স্কেল এবং মহার্ঘ ভাতা সহ ১১ দফা দাবি সরকারি কর্মচারীদের ?
আগামী অর্থবছরে এই ঘাটতির সংখ্যা এইরকম বৃদ্ধিতে পারে বলে অর্থবিভাগকে জানিয়ে দিয়েছে টিসিবি। টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বর্তমান প্রতিমাসে একবার টিসিবির পণ্য দেওয়া হচ্ছে। তবে আগামীতে মাসের মধ্যে দুইবার করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এতে করে টিসিবির আরও বহু অর্থ সহায়তার প্রয়োজন হবে। সেক্ষেত্রে বছরে ৫ হাজার ২০০ কোটি অর্থের ভর্তুকির প্রয়োজন হবে। এদিকে, সোশ্যাল নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় উপকারভোগীর আওতা বৃদ্ধি করিয়ে বহু সংখ্যক মানুষকে অ্যাডভান্টেজ দেওয়ার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া আগামী বাজেটে নিউ করে ৭ লাখ ৩৫ হাজার বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা পাবেন। বাজেটে সামাজিক সিকিউরিটি বেষ্টনীতে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সেইম সাথে বয়স্ক ভাতার পরিমাণ ১০০ টাকা তার সাথে বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা ৫০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী ১ জুন অর্থমন্ত্রী মহান জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন।
রিলেটেড ট্যাগঃ টিসিবির পণ্য বিক্রয় ?
আমি বাংলাদেশ সরকারের অডিট এন্ড একাউন্টস বিভাগের একজন কর্মচারি। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে কর্মরত থাকায় বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শেয়ার করে থাকি। তারপরও যে কোন ভুল ত্রুটি হলে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কোন পরামর্শ থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।