যে সব পেনশনার শতভাগ পেনশন বিক্রি করেছেন তারা কত বছর পর পুনরায় শতভাগ পেনশন প্রাপ্য হবেন ?
- সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারিগণ অবসরে যাওয়ার সময় পেনশন এবং আনুতোষিক পেয়ে থাকেন । জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ জারির আগ পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারিগণ তাদের পেনশন ১০০% বিক্রি করার অপশন ছিল। তখন অনেকেই তাদের পেনশন এবং অনুতোষিক ১০০% বিক্রি করে সরকারের নিকট হতে এককালীন অর্থ গ্রহন করেছেন। উক্ত পেনশনারগণ প্রতি মাসে শুধু চিকিৎসা এবং উৎসব ভাতা পেয়ে থাকেন। ৮ অক্টোবর ২০১৮ সাল থেকে সেসব পেনশনারগণ শতভাগ পেনশন সমর্পণ করেছন মাসিক পেনশন পুনঃস্থাপন করার অর্থাৎ পুনরায় পেনশন প্রদান করার সিন্ধান্ত নিয়েছেন। এই পোস্ট আমরা বিস্তরিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী অবসরপ্রাপ্তদের পুনরায় পেনশন প্রদান করার সময় ১০ বছর করার দাবী ?
সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের পেনশন সাধারণত মূল বেতনের ৯০% এর অর্ধেক টাকা এককালীন পেয়ে থাকে, বাকি অর্ধেক টাকা প্রতি মাসে পেনশন আকারে পেতে থাকে। বেসামারি সরকারি সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন মুঞ্জুরী সংক্রান্ত বিধিমাল/ পদ্ধতি সহজীকরণ আদেশ ০১-০৬-১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দ তারিখের আদেশের ২.১৩ অনুযায়ী ”বর্তমানে একজন পেনশনার তার গ্রস পেনশন এর ৫০% সমর্পণ করে এককালীন আনুতোষিক প্রাপ্য হয় । যে সকল চাকুরে এই আদেশ কার্যকর হওয়ার আগের তারিখে অথবা তারপরে অবসর গ্রহণ করিবেন তারা ইচ্ছা প্রকাশ করলে অবশিষ্ট গ্রস পেনশনের ফিফটি ভাগ ও একবারের সমর্পণ করিয়া উহার পরিবর্তে প্রচলিত বিনিময় হারের অর্ধেক হারে আনুতোষিক গ্রহণ করিতে পারিবেন। উক্ত অবশিষ্ট ৫০% ভাগ পেনশন একেবারে সমর্পণের বিষয়টি পেনশনারের প্রথম আবেদনপত্রে সুনির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ করিতে হইবে পরবর্তী সময় বা খন্ড খন্ড ভাবে সমর্পণের কোন আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।”
উদাহরণ হিসেবে একজন সরকারি কর্মচারী বা কর্মকর্তার পেনশনে গমনের সময় যদি মূল বেতন ৯৭৫০ টাকা হয় তাহলে এর ৯০ পার্সেন্ট এর অর্ধেক এককালীন আনুতোষিক আকারে পাবেন বাকি অর্ধেক মাসিক পেনশন আকারে পেতে থাকবে ।
এককালীন আনুতোষিক পাবেনঃ (মুলবেতনX৯০%)/ ২
= (৯৭৫০X৯০%)/ ২
=৪৩৮৭.৫ টাকা X ২০০
= ৮,৭৭,৫০০/- টাকা
এককালীন আনুতোষিক পেতেন।
- তিনি যদি ১০০% পেনশন সমর্পর্ণ না করতেন তাহলে প্রতি মাসে ৪৩৮৭.৫ টাকা হারে মাসিক পেনশন প্রাপ্য হতেন।
- যদি তিনি যদি ১০০% পেনশন সমর্পর্ণ করতেন তাহলে তিনি আরও এককালীন অনুতোষিক ৪৩৮৭.৫ টাকা X ১০০ টাকা ( প্রথম এককালীন আনুতোষিক ২০০টাকার পরিবর্তে ১০০টাকা ) অর্থাৎ ৪,৩৮,৭৫০/- টাকা প্রাপ্য হবেন।
- শতভাগ পেনশন সমর্পণ করলে ( ৮,৭৭,৫০০/- টাকা+৪,৩৮,৭৫০/- টাকা)=১৩,১৬.২৫০/- টাকা প্রাপ্য হবেন।
- তিনি মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন না শুধু মেডিকেল ভাতা এবং উৎসবভাতা প্রাপ্য হবেন।মুল পেনশনা মারা গেলে তার স্বামী/স্ত্রী ও প্রতিবন্ধী সন্তান মেডিকেল ভাতা এবং উৎসবভাতা প্রাপ্য হবেন।
আরও জানুনঃ পারিবারিক পেনশন ফরম ২.২ পূরণের নিয়ম ?
অর্থ মন্ত্রণালয় অর্থ বিভাগের ০৯-০১-২০১৭ খ্রিঃ ২ তারিখের প্রজ্ঞাপরে মাধ্যমে ও আর্থিক এবং সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সরকারি কর্মচারীগণের পেনশনের ১০০ ভাগ সমান সুবিধা বাতিল করিয়া ফিফটি পার্সেন্ট বাধ্যতামূলক সমর্পণ এবং অবশিষ্ট ৫০ ভাগের জন্য নির্ধারিত হার অনুযাযী মাসিক পেনশন গ্রহণের সুবিধা প্রবর্তন করে এবং ১৯৯৪ সালে শতভাগ পেনশন সমর্পণের আদেশটি বাতিল করে।
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারিদের ১৫বছর পর পুনরায় পেনশন পাওয়ার শর্ত ?
সরকার শতভাগ সমর্পণকারী প্রজাতন্ত্রের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীগণের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য মাসিক পেনশন পুনঃস্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
গুগল নিউজ হতে আপডেট ” নিউজ হতে আইবাস++ ও সরকারি নিউজের আপডেট সংগ্রহ করে নিতে পারেন।
- শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী অবসর প্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীগণের অবসর গ্রহণের তারিখ হতে ১৫ বছর সময় অতিক্রান্তের পর তাদের পেনশন পুন:স্থাপন করা হবে।
- কর্মচারীর পিআরএল যে তারিখে শেষ হয়েছে তার পরদিন হতে উক্ত ১৫ বছর সময় গণনা করা হবে।
- যারা এলপিআর/পিআরএল ভোগ করেননি তাদের অবসর গ্রহণের তারিখ উক্ত ১৫ বছর সময় গণনাযোগ্য হবে;
আরও জানুনঃ কত বছরে কত পেনশন ? পেনশনযোগ্য চাকরিকাল এবং পেনশনের পরিমাণ কত ?
- নিয়মিত পেনশনারগণের পদ্ধতি ও নিয়মে শতভাগ পেনশনসমর্পণকারী অবসর প্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীগণের মাসিক পেনশন নির্ধারিত হবে;
- ন্যূনতম মাসিক পেনশন হবে ৩০০০ টাকা।
- শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীর ০১-০৭-২০১৭ তারিখে বা তার পরবর্তী সময়ে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) যে পেনশন নির্ধারিত হবে তার উপর প্রতিবছর ১ জুলাই তারিখে ৫% হারে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট প্রদেয় হবে।
- পেনশন পুন:স্থাপনের উক্ত সুবিধা ০১-০৭-২০১৭ তারিখ থেকে কার্যকর হবে। তবে ০১-০৭-২০১৭ তারিখের পূর্বের কোন আর্থিক সুবিধা প্রদেয় হবে না।
পেনশনারের ১৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই মারা গেলে তার পরিবার পেনশন পুনঃস্থাপন করতে পারবে কি ?
- মুলপেনশনার জীবিত থাকাকালীন পেনশনটি চালু না করতে পারলে তার পরিবার আর শতভাগ পেনশন সুবিধা চালু করতে পারবে না।
- এক্ষেত্রে তার পরিবার শুধু চিৎকিৎসা এবং উৎসব ভাতা প্রাপ্য হবেন।
- পরিবার বলতে উক্ত পেনশনারের স্বামী বা স্ত্রীকে বুঝায়।
শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী অবসরপ্রাপ্তদের ১৫ বছর পূর্ণ হতে কি করবেন ?
- শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী অবসরপ্রাপ্তদের ১৫ বছর পূর্ণ হলে যে কোন হিসাবরক্ষণ অফিসে উপস্থিত হয়ে লাইফভেরীফিকেশন সম্পন্ন করতে হবে। অবশিষ্ট কাজ পেনশন ফান্ড ম্যানেজমেন্ট হতে সম্পন্ন করে ইএফটি প্রদান করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
শতভাগ পেনশন সমর্পণকারীদের পুনরায় পেনশন পাওয়ার সময় ১০ বছর করার দাবি ?
- শতভাগ পেনশন সমর্পণকারীগণ বিভিন্ন সংগঠন থেকে বলা হচ্ছে অনেক পেনশনারই অবসর গ্রহণের পর ১৫বছর পর্যন্ত বেচেঁ না থাকায় তারা পেনশনের সুযোগ থেকে উক্ত পেনশনার এবং তার পরিবার পেনশন পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে । তাই শতভাগ পেনশন সমর্পণকারীদের পুনরায় পেনশন পাওয়ার সময় ১০ বছর করার সরকারে কাছে দাবি করেছেন।
আরও জানুনঃ শতভাগ পেনশন সর্মপনকারী পেনশনারগণের ১৫ বছর পর পুনরায় পেনশন পাওয়ার নিয়ম ২০২৪ ?
শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী সরকারি কর্মচারী/কর্মকর্তাদের পেনশন পুনঃস্থাপন | মাসিক পেনশন পুনঃস্থাপন বিস্তারিত জেনে নিন।
সরকার শতভাগ সমর্পণকারী প্রজাতন্ত্রের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীগণের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য মাসিক পেনশন পুনঃস্থাপনের সিদ্ধান্ত প্রজ্ঞাপনটি ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
reinstated pensioner information form নিম্নের লিংক হতে ডাউনলোড করার যাবেঃ
Existing Pension (Reinstated) form word form সংগ্রহের করে নিতে পারেন।
Existing Pension (Reinstated) form pdf form সংগ্রহের করে নিতে পারেন।
Family Pension (Reinstated) form word form সংগ্রহের করে নিতে পারেন।
Family Pension (Reinstated) form pdf form সংগ্রহের করে নিতে পারেন।
অনলাইন পেনশন ক্যালকুলেটরের সাহায্যে পেনশনের হিসাব বের করার পদ্ধতি ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
আমি বাংলাদেশ সরকারের অডিট এন্ড একাউন্টস বিভাগের একজন কর্মচারি। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে কর্মরত থাকায় বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শেয়ার করে থাকি। তারপরও যে কোন ভুল ত্রুটি হলে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কোন পরামর্শ থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।