nocomments

২০২৩-২৪ অর্থবছর হতে শুরু হতে যাচ্ছে ভুমি ক্রয় বিক্রয়ে ই রেজিস্ট্রেশন বা ই দলিল ? কমবে হয়রানি ?

পার্বত্য তিন জেলা বাদে দেশের ৬১ জেলায় অনলাইনে ভূমি রেজিস্টার কার্যক্রম আরম্ভ করার জন্য যাচ্ছে সরকার। রেজিস্ট্রেশন অধিদপ্তরের আওতাধীন ৪৮৮টি সাব-রেজিস্ট্রি কাজের জায়গায় কাগজের ভলিউমে কাগজপত্র রেজিস্ট্রির পরিবর্তে অনলাইনে নথিপত্র রেজিস্ট্রি ও রেকর্ড সংরক্ষণের কার্যক্রম আগামী অর্থবছরেই শুরু হবে। ইতোমধ্যে এ-সংক্রান্ত প্রকল্প প্রস্তাব প্লানিং কমিশনের সাহায্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় (একনেক) পাঠানো হয়েছে। এজন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে আইন মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতি খাতে রাখা হয়েছে বিশেষ বরাদ্দ।

গুগল নিউজ হতে আপডেট ” নিউজ হতে আইবাস++ ও সরকারি নিউজের আপডেট সংগ্রহ করে নিতে পারেন।



আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রের উন্নতি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২০-২১ অর্থবছরে ‘ভূমি রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থাপনা ডিজিটাইজেশনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্প’ শীর্ষক ১টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের প্রাক্কলিত খরচ ধরা হয়ে গিয়ে ছিল ১ কোটি ৬০ লাখ ৩২ হাজার টাকা। পরে এর আওতায় ২০২১ সালে রাষ্ট্রের ১৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইনে লান্ড রেজিস্টার কার্যক্রম আরম্ভ হয়। পাইলট প্রকল্পের অগ্রগতি সন্তোষজনক হওয়ায় এই সময়ে ৪৮৮টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ইন্টারনেটে ভূমি নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করার সমস্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।


মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২১ সালের ১০ জুন থেকে ২০২৩ সালের ১৩ জুন পর্যন্ত পাইলট প্রকল্পের আওতায় ১৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ৭৮ হাজার ১৯৫টি কাগজপত্র ই-রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় নিবন্ধিত হয়েছে। আজকাল ঢাকার উত্তরা, খিলগাঁও, Gulshan and Savar, Anwara and Pahartali in Chittagong, Rupganj in Narayanganj, Tungipara in Gopalganj, Kasba in Brahmanbaria, Kumarkhali in Kushtia, Basil and Nagarpur in Tangail, রাজশাহীর চারঘাট, সিলেটের তাজপুর, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর, ময়মনসিংহের নান্দাইল এবং বরিশালের হিজলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অনলাইনে ভূমি রেজিস্টার কার্যক্রম কার্যকর রয়েছে। দেশে আজকাল ৪৯৫টি উপজেলায় ৫০৫টি সাব-রেজিস্ট্রি দফতর রয়েছে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সমকালকে বলেন, অনলাইনে ভূমি রেজিস্টার কার্যক্রম চালু হলে জমি  ক্রয়-বিক্রয়ে শৃঙ্খলা আসবে ও জাল-জালিয়াতি প্রতিরোধ করা পসিবল হবে। এতে রেজিস্ট্রি সার্ভিস নিতে মানুষের হয়রানি, সময় ও অর্থ ব্যয় এবং আইনজীবী জমিসংক্রান্ত মামলা-মোকদ্দমা যাবে।

পাইলট প্রকল্পের আওতায় প্রাপ্ত ১৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অগ্রগতি সন্তোষজনক মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, অনলাইনে ভূমি নিবন্ধনের ফলে জমির পাল্টানো ও জাল খতিয়ানের মাধ্যমে কাগজপত্র নিবন্ধন অফ হয়েছে। জটিলতা ছাড়াই সঠিকভাবে দলিলদাতা তার সাথে গ্রহীতার রেজিস্টার সম্পন্ন হচ্ছে। ভূমিকর আদায়ও গতিশীল হয়েছে। উনি জানান, সারাদেশের রেকর্ডরুমে রক্ষিত বালাম বইগুলো আর্কাইভে সংরক্ষণের ডিসিশন নেওয়া হয়েছে। এটা হলে লান্ড ক্রয়-বিক্রয়ে শৃঙ্খলা আসবে তার সাথে জাল-জালিয়াতি প্রতিরোধ করা পসিবল হবে।

আরও জানুনঃ দেশের  ভূমি ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল প্রযুক্তি ? ই-নামজারি কি ? ভূমি মালিকদের আধুনিক কার্ড ?



ই রেজিস্ট্রেশনবা ই দলিল প্রকল্প বাস্তবায়নের উন্নয়ন প্রসঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়ের বিধান ও বিচার বিভাগের সচিব মো. চাকর সারওয়ার বলেন, মন্ত্রণালয় হতে অনলইনে লান্ড নিবন্ধন-সংক্রান্ত ১টি প্রকল্প প্রস্তাব প্লানিং কমিশনে পাঠানো হয়েছে। তাতে পাইলট প্রকল্পের অগ্রগতিসহ সার্বিক ব্যপারে সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়েছে। আশা করছি, এটা শিগগিরই একনেকে অ্যাপ্রুভের জন্য উপস্থাপন করা হবে। উনি জানান, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসকে নিজ নিজ প্রশাসনিক এখতিয়ারের ভিতরে রেখে এরই মধ্যে আন্তঃসংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অনলাইনে কৃষিখেত রেজিস্টার কার্যক্রম শেষ হবে।

বাংলাদেশ নিবন্ধন পরিসেবা অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও ঢাকার খিলগাঁওয়ের সাব-রেজিস্ট্রার এস এম শফিউল বারী বলেন, সারাদেশে ই-রেজিস্ট্রেশন শুরু হলে একজনের লান্ড প্রতারণার সাহায্যে একাধিকবার বিক্রি বন্ধ হবে। লান্ড অফিসের সার্ভারের সঙ্গে সংযোগ থাকায় সরকারি জমির লিস্ট সার্ভারে থাকবে। এর ফলে কোনো ঠক সরকারি জমি বিক্রি করে দেওয়ার চান্স পাবে না। ম্যানুয়ালি নথি হলে বালাম তিন বছর পর পেত। ই-রেজিস্ট্রেশন হওয়ায় খিলগাঁওয়ে আজকাল দলিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটা সার্ভারে চলে যাচ্ছে।

আরও জানুনঃ ডিজিটাল ভুমি ব্যবস্থাপনায় ১ বৈশাখ ১৪৩০ হতে ভুমি উন্নয়ন কর শতভাগ অনলাইনে



নিবন্ধন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে সারাদেশে ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ১৯৭টি দলিল রেজিস্ট্রি হয়ে গিয়েছে এবং মোট ভূমিকর আয় হয়ে গিয়েছে ১১ হাজার ৬০১ কোটি ৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ আয় হয়ে গিয়েছে ৮ হাজার ১১১ কোটি ১৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও স্থানীয় গভর্নমেন্ট কর বাবদ আয় হয়েছে ৩ হাজার ৪৮৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে সারাদেশে ৩৪ লাখ ৭৪ হাজার ৬৯৬টি দলিল রেজিস্ট্রি হয়েছে তার সাথে এ খাত থেকে সর্বমোট রোজগার হয়েছে ১২ হাজার ২৯২ কোটি ৮৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে নিবন্ধন বাবদ রোজগার ৯ হাজার ৩৩৯ কোটি ৪১ লাখ ৪০ হাজার টাকা তার সাথে স্থানীয় রাষ্ট্রশাসক বিভাগ কর বাবদ ২ হাজার ৯৫৩ কোটি ৪৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা।

রিলেটেড ট্যাগঃ ই রেজিস্ট্রেশন বাংলাদেশ,ভূমি রেজিস্ট্রেশন অনলাইন,e registration,ই দলিল,ই রেজিস্ট্রেশনবা ই দলিল

সূত্রঃ সমকাল

Reply

error: Content is protected !!