nocomments

১১তম গ্রেডে বেতন ও ভাতাদি কত ও পেনশন কত হতে পারে ?

বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ক্ষেত্রে ১১তম গ্রেড অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বেতন স্কেল। সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সর্বশেষ বেতন কাঠামো নির্ধারিত হয় জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী। ১১ তম গ্রেডে  যারা চাকরি করেন, তাদের মূল বেতন কত হবে, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, এবং অন্যান্য ভাতা সহ মোট কত টাকা বেতন হবে  বেতন ভাতা বাদে অন্যান্য কি কি সুযোগ-সুবিধা রয়েছে আজকের পোস্টটা আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব।  

সরকারি চাকরিতে শ্রেণীভিত্তিক বৈষম্য কমানোর জন্য সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারিদের  ২০১৫ সালে গ্রেডভিত্তিক নতুন পে-স্কেল চালু করা হয় এবং এতে চারটি শ্রেণী যথা: প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর করা হয়। সরকারি বিভিন্ন নির্দেশনা ও নীতিমালার কারণে শ্রেণীভিত্তিক ব্যবস্থা এখনো রয়ে গেছে।

সরকারি চাকরির নতুন শ্রেণিবিন্যাসনতুন পদ্ধতিতে:

  • প্রথম শ্রেণি: ১ম থেকে ৯ম গ্রেড (গেজেটেড অফিসার বা ক্যাডার)।
  • দ্বিতীয় শ্রেণি: শুধুমাত্র ১০ম গ্রেড।
  • তৃতীয় শ্রেণি: ১১তম থেকে ১৬তম গ্রেড।
  • চতুর্থ শ্রেণি: ১৭তম থেকে ২০তম গ্রেড।

জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী ১১ তম গ্রেডে নিয়োগকৃত কর্মচারিদের বেতন ও ভাতদি নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ

১১তম গ্রেডে বেতন কত
১১তম গ্রেডে বেতন কত

১১তম গ্রেডের বেতন কাঠামো ?

২০১৫ সালের বেতন গেজেট অনুযায়ী:

  • চাকরি শুরুর মূল বেতন: ১২,৫০০ টাকা।
  •   সর্বোচ্চ বেতন: ৩২,২৪০ টাকা।
  •   বার্ষিক বৃদ্ধি: ৫% হারে।

১১তম গ্রেডের বেতন স্কেল ?

১২,৫০০ → ১৩,১৩০ → ১৩,৭৯০ → ১৪,৪৮০ → ১৫,২১০ → ১৫,৯৮০ → ১৬,৭৮০ → ১৭,৬২০ → ১৮,৫১০ → ১৯,৪৪০ → ২০,৪২০ → ২১,৪৫০ → ২২,৫৩০ → ২৩,৬৬০ → ২৪,৮৫০ → ২৬,১০০ → ২৭,৪১০ → ২৮,৭৯০ → ৩০,২৩০ → ৩২,২৪০

১১তম গ্রেডে বেতন :

  • অর্থনৈতিক কোড-৩১১১২০১ মুল বেতনঃ১২,৫০০/- টাকা 
  • অর্থনৈতিক কোড-৩১১১৩১০ বাড়িভাড়া ভাতাঃ ৫৬২৫/- টাকা  (ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য ৬০% ও চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট,  বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ ও গাজিপুর সিটি কর্পোরেশন এবং সাভার এলাকার জন্য ৫০% এবং অন্যান্য স্থানের জন্য ৪৫% )
  • অর্থনৈতিক কোড-৩১১১৩১১ মেডিকেল ভাতাঃ ১৫০০/- টাকা
  • অর্থনৈতিক কোড-৩১১১৩১৪  টিফিন ভাতাঃ ২০০/- টাকা
  • অর্থনৈতিক কোড-৩১১১৩০২ যাতায়াত ভাতাঃ ৩০০/- টাকা

মোট বেতন ভাতাদি= (১২৫০০+৫৬২৫+১৫০০+২০০+৩০০)=২০,১২৫/- টাকা। এ ছাড়াও নিম্ন লিখিত ভাতাদি প্রাপ্য হবেন।

যাতায়াত ভাতা এবং যাতায়াত ভাতার  অর্থনৈতিক কোড-৩১১১৩০২

(১) জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ এর ১১ নং হইতে ২০ নং গ্রেডের বেসামরিক কর্মচারীর ক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কর্মস্থল হইলে তিনি ১ জুলাই ২০১৬ তারিখ হইতে মাসিক ৩০০ (তিন শত) টাকা হারে যাতায়াতভাতা প্রাপ্য হইবেন।

শিক্ষা সহায়কভাতা এবং শিক্ষা ভাতার অর্থনৈতিক কোড ৩১১১৩০৬

(১) সকল কর্মচারীর জন্য সন্তান প্রতি মাসিক ৫০০ (পাঁচ শত) টাকা হারে এবং অনধিক ২ (দুই) সন্তানের জন্য মাসিক সর্বোচ্চ ১০০০ (এক হাজার) টাকা শিক্ষা সহায়কভাতা প্রদেয় হইবে, তবে, স্বামী ও স্ত্রী উভয়ই সরকারি কর্মচারী হইলে সন্তান সংখ্যা যে কোন একজনের ক্ষেত্রেই গণনা করিয়া ভাতার পরিমাণ নির্ধারণ করিতে হইবে।

 (২) বয়সের সাটিফিকেট দাখিল সাপেক্ষে ২১ (একুশ) বৎসর পর্যন্ত বয়সী সন্তানেরা শিক্ষা সহায়কভাতা প্রাপ্য হইবেন।

(৩) শিক্ষা সহায়কভাতার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগের ১৪/১০/২০১৫ খ্রি. তারিখের ০৭.১৭৩.০৩১.০২.০০.০৩০.২০১০-৭৯ নং স্মারক অনুসরণ করিতে হইবে।

পাহাড়ি ভাতা এবং পাহাড়ি ভাতার অর্থনৈতিক কোড ৩১১১৩০৯

  • পার্বত্য জেলাসমূহের জেলা সদর ও সদর উপজেলায় নিযুক্ত সকল কর্মচারীর জন্য মূল বেতনের ২০% হারে সর্বোচ্চ ৩০০০ (তিন হাজার) টাকা এবং অন্যান্য উপজেলার জন্য মূল বেতনের ২০% হারে সর্বোচ্চ ৫০০০ (পাঁচ হাজার) টাকা পাহাড়িভাতা প্রদেয় হইবে।
  • হাওড় ভাতা এবং হাওড় ভাতার অর্থনৈতিককোড ৩১১১৩৪৩

বেতন কী ? অনলাইনে বেতন নির্ধারণের প্রযোজনীয়তা ? কখন অনলাইনে বেতন নির্ধারণ প্রযোজন হয় ?

  • হাওড়/চর/দ্বীপ হিসেবে ঘোষিত ১৬টি উপজেলায় কর্মরত কর্মকর্ত /কর্মচারিরা হাওড় ভাতা পেয়ে থাকেন।

১১তম গ্রেডে বোনাস কয়টি পাবে ?

সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বছরে তিনটি বোনাস প্রদান করা হয়:

  • ঈদুল ফিতর বোনাস: মুল বেতনের সমান।
  •  ঈদুল আযহা বোনাস: মুল বেতনের সমান।
  • অন্যান্য ধর্মের লোকজন তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবে এককালীন দুটি উৎসব নাচ পেয়ে থাকে।
  •  বৈশাখী ভাতা: মূল বেতনের ২০%।

১১তম গ্রেডে চাকরি পেতে যোগ্যতা  কি কি লাগে ?

এই গ্রেডে চাকরি পাওয়ার জন্য সর্বনিম্ন স্নাতক ডিগ্রি বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা আবশ্যক। উচ্চতর ডিগ্রিধারীদের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

১১তম গ্রেডে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা  কি কি রয়েছে ? 

  • মাসিক ও বার্ষিক ভাতা।
  • অবসরের পর এককালীন অর্থপ্রাপ্তি।
  •  স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সহায়তা।

বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট: প্রতি বছর জুলাই মাসে মূল বেতনের ৫% হারে বাড়ে।

 পেনশন সুবিধা: চাকরির মেয়াদ শেষে সরকার  আনুতোষিক এবং পেনশন সুবিধা প্রদান করে।
 প্রভিডেন্ট ফান্ড (GPF): সরকারি চাকরিজীবীরা প্রতি মাসে বেতনের নির্দিষ্ট অংশ জমা করতে পারেন, যা পরে মুনাফা সহ ফেরত দেওয়া হয়।

১১ তম গ্রেডে বিভিন্ন দপ্তর অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয়ের পদোন্নতি সুযোগ রয়েছে।

হাওড় ভাতার গেজেট ২০১৯

হাওড় ভাতার গেজেট ২০২২

১১ তম গ্রেডের স্টাফদের পেনশন ও আনুতোষিকের পরিমাণ কত?

১১তম গ্রেডের স্টাফদের পেনশন ও আনুতোষিকেরপরিমাণঃ

যদি ১১ তম গ্রেডে নিয়োগের পরে আপনি কোন টাইমস্কেল, উচ্চতর গ্রেড নাও পেয়ে থাকেন  ১১ তম গ্রেডের বেতন ও ভাতাদি গ্রহণ করে আপনি অবসরে যান, তাহলে ;

১১ তম গ্রেডের বেতন স্কেল:

টাকা-১২৫০০-১৩১৩০-১৩৭৯০-১৪৪৮০-১৫২১০-১৫৯৮০১৬৭৮০-১৭৬২০-১৮৫১০-১৯৪৪০-২০৪২০-২১৪৫০-২২৫৩০-২৩৬৬০-২৪৮৫০-২৬১০০-২৭৪১০-২৮৭৯০-৩০২৩০

পেনশন ও আনুতোষিক হিসাব =( শেষ বেসিক*শতকরা হার)/২

পেনশন ও আনুতোষিক হিসাব = ( ৩০২৩০*৯০%)/২

পেনশন ও আনুতোষিক হিসাব =২৭২০৭/২

এককালীন আনুতোষিকের পরিমাণ =১৩৬০৩.৫ টাকা *২৩০ টাকা

                                       = ৩১,২৮,৮০৫ টাকা

 পেনশন মাসিক পেনশনের পরিমাণ =১৩৬০৩.৫ টাকা + মেডিকেল ভাতা-১৫০০টাকা ( ৬৫ বছরের উর্দ্ধে হলে ২৫০০/- টাকা)

নোটঃ ১১ তম গ্রেডে নিয়োগের পরে আপনার পদোন্নতি না হলেও আপনি অবশ্যই টাইমস্কেল, উচ্চতর গ্রেড পাবেন এবং বেতনের গ্রেড পরিবর্তন হবে।

১১ তম গ্রেডে বেতন কত?  ১১তম গ্রেডে  সম্পূর্ণ বেতন কাঠামো বিস্তারিত জেনে নিন ?

আইবাস++ ও সরকারি নিউজের আপডেট জানতে আমাদের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন।

উপসংহার

সরকারি চাকরিতে ১১তম গ্রেড একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ, যা তৃতীয় শ্রেণির সর্বশেষ ধাপ । এই ধাপের পরই রয়েছে ১০গ্রেডের ধাপ । । এই গ্রেডের চাকরি পাওয়া অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক, তাই ভালো প্রস্তুতি নেওয়া অবশ্যই দরকার ।

Reply