অ্যামনিওটিক ফ্লুইড কি ? অ্যামনিওটিক ফ্লুইড এর কাজ কি ? গর্ভফুল কি ? গর্ভবতী কত দিন পর সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় ?
অ্যামনিওটিক ফ্লুইড কি ?
এ্যামনিওটিক ফ্লুইড ( Amniotic Fluid):
মায়ের জরায়ুতে বাচ্চা এ্যামনিওটিক ফ্লুইড নামক তরলের মধ্যে অবস্থান করে গর্ভাবস্থায় বাচ্চা জেস্টেশন স্যাক (Gestation Sac) নামক একটি পাতলা আবরণের থলের মধ্যে থাকে । এই স্যাকের মধ্যে বাচ্চা পানির মধ্যে মাছের মতো নড়াচড়া করে । এই পানিকে এ্যামনিওটিক ফ্লুইড বলে ।
গুগল নিউজ হতে আপডেট ” নিউজ হতে আইবাস++ ও সরকারি নিউজের আপডেট সংগ্রহ করে নিতে পারেন।
অ্যামনিওটিক ফ্লুইড এর কাজ কি ?
- গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে বাচ্চার চামড়া ও অন্যান্য অংশ থেকে এই ফ্লুইড তৈরি হয় । পরবর্তীতে এর একটা বড় অংশ আসে বাচ্চার প্রস্রাব থেকে ।
- বাচ্চা প্রয়োজনে এই ফ্লুইড খেয়ে থাকে । গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে বাচ্চা দৈনিক গড়ে ৪০০-৫০০ মি.লি. এ্যামনিওটিক ফ্লুইড খেয়ে থাকে ।
- এই ফ্লুইডের মধ্যে বাচ্চা সহজে নড়াচড়া করতে পারে ।
- তাই এই ফ্লুইড বাচ্চাকে যে কোন আঘাত থেকে রক্ষা করে।
- এ ছাড়াও এই ফ্লুইড বাচ্চার পুষ্টিরও যোগান দেয় ।
- বাচ্চার ফুসফুসের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে ।
আরও জানুনঃ ভ্রুণ কিভাবে তৈরি হয় ? ডিম্বাণু ও শুক্রাণু কিভাবে মিলিত হয় ? যমজ সন্তান কেন হয় ?
গর্ভফুল কি ?
গর্ভফুল (Placenta / After birth)
সন্তান প্রসবের পর জরায়ু থেকে চাকতির মতো যে জিনিসটি বের হয়ে আসে, তাকে গর্ভফুল বা প্লাসেন্টা বলা হয়ে থাকে । এই ফুলের উৎপত্তি হয় মা ও গর্ভস্থ শিশুর দেহের কোষকলার সংমিশ্রণে ।
প্লাসেন্টা জরায়ুর গায়ে লাগানো থাকে । নাড়ি বা আমবিলিকাল কর্ড দ্বারা বাচ্চা এই প্লাসেন্টার মাধ্যমে মায়ের সাথে সংযুক্ত হয়ে থাকে । এ প্লাসেন্টার মাধ্যমেই বাচ্চা মা হতে অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করে থাকে এবং বাচ্চা তার দেহ হতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ মায়ের দেহে ত্যাগ করে । মায়ের শরীর তখন এসব পদার্থগুলোকে দেহ হতে নির্গত করে থাকে। যদিও প্লাসেন্টার মাধ্যমেই মা ও বাচ্চার মধ্যে বিভিন্ন বস্তুর আদান-প্রদান হয়ে থাকে, তথাপি বাচ্চার রক্ত ও মায়ের রক্ত একে অপরের সাথে স্বাভাবিক অবস্থায় (Normal Situation) মিশ্রিত হয় না । একে অপরের বেশ নিকটে আসে এবং অতিশয় পাতলা আবরণ দ্বারা একে অপরের থেকে পৃথক থাকে । একটা জিনিস যা খুব আশ্চর্যের বিষয় তা হলো, মা ও বাচ্চার শরীরের টিস্যু এক না হওয়া সত্ত্বেও জরায়ুর ভেতর বাচ্চা নিরাপদে বৃদ্ধি লাভ করতে থাকে ৷
গর্ভবতী কত দিন পর সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় ?
সন্তান ভূমিষ্ঠের তারিখ (Expected Date of Delivery (EDD)
মানবসন্তানের জন্য গর্ভাবস্থার কাল হলো ৪০ সপ্তাহ । শেষ মাসিক শুরুর দিন হতে শুরু করে এ হিসাব করা হয়ে থাকে । চল্লিশ সপ্তাহ শেষে সন্তান জন্মের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এই তারিখকে এক্সপেক্টেড ডেইট অব ডেলিভারি বা ইডিডি (Expected Date of Delivery or EDD) বলা হয় । প্রত্যাশিত জন্মের তারিখটি একটি সম্পূর্ণ আনুমানিক তারিখ মাত্র । বেশির ভাগ শিশুই এই তারিখের আগে অথবা পরে জন্মগ্রহণ করে থাকে । তবে যদি মা ও বাচ্চা সুস্থ থাকেন তখন চিকিৎসক অবস্থাভেদে সন্তান ডেলিভারির তারিখ (EDD) হতে আরও দুই সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন ।
প্রথম ২২ সপ্তাহের গর্ভাবস্থায় প্রসূতির পেটের আকৃতির তেমন কোন পরিবর্তন হয় না । এর পর শিশু যতই বাড়তে থাকে, মায়ের পেটও তত বড় হতে থাকে । সাধারণত ১৮-২০ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভবতী মা সর্বপ্রথম সন্তানের নড়াচড়া অনুভব করেন। যিনি ইতোপূর্বে সন্তান ধারণ করেছেন তিনি কিছুদিন আগেই এই নড়াচড়া অনুভব করতে পারেন । একজন মা সাধারণত তার শেষ মাসিকের প্রথম দিন হতে ছয় সপ্তাহ পরে বুঝতে পারেন যে তিনি গর্ভবতী । আর তখন শিশুটির আকার হয় একটা চাউলের সমতুল্য । আট সপ্তাহের সময় শিশুটির দৈর্ঘ্য হয় মাত্র ৩ সে. মি. । বিশ সপ্তাহ গর্ভকালীন সময়ে এই দৈর্ঘ্য জন্মকালীন সময়ের দৈর্ঘ্যের অর্ধেক হয় । শিশু সাধারণত ২০ সপ্তাহে ৫০০ গ্রাম, ২৮ সপ্তাহে ১ কেজি, ৩২ সপ্তাহে ২ কেজি ও ৩৬ সপ্তাহে ৩ কেজি ওজন সম্পন্ন হয় ।
৪০ সপ্তাহে কত মাস হয় ?
৪০ সপ্তাহে কত মাস : ৪০ সপ্তাহে ৯মাস ১০ দিন হয়।
রিলেটেডঃ অ্যামনিওটিক ফ্লুইড কি ?,এমনিওটিক ফ্লুইড কত থাকা স্বাভাবিক,এমনিওটিক ফ্লুইড কমে গেলে করণীয়, গর্ভাবস্থায় পানি বেড়ে গেলে করণীয়, গর্ভফুল কি, গর্ভফুল নিচে থাকলে কি করতে হবে, গর্ভবতী কত দিন পর সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়, গর্ভাবস্থায় কত সপ্তাহে কত মাস,৪০ সপ্তাহে কত মাস হয়, গর্ভফুলের কাজ
আমি বাংলাদেশ সরকারের অডিট এন্ড একাউন্টস বিভাগের একজন কর্মচারি। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে কর্মরত থাকায় বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শেয়ার করে থাকি। তারপরও যে কোন ভুল ত্রুটি হলে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কোন পরামর্শ থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।