ভ্রুণ কিভাবে তৈরি হয় ? ডিম্বাণু ও শুক্রাণু কিভাবে মিলিত হয় ? যমজ সন্তান কেন হয় ?
পোস্ট সামারীঃ
- ভ্রুণ কি ?
- ভ্রুণ কিভাবে তৈরি হয় ?
- শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলনকে কি বলে ?
- ফার্টিলােইজেশন বা নিষিক্তকরণ কি ?
- ইমপ্লান্টেশন কখন হয় এবং ইমপ্লান্টেশন বলতে কি বুঝায় ?
- যমজ শিশু হওয়ার কারণ বা যমজ সন্তান হওয়ার উপায় ? যমজ সন্তান কেন হয় ?
- জমজ বাচ্চা হলে করনীয় বা যমজ সন্তানের জটিলতা কতটা সাধারণ ?
- জমজ সন্তান আছে কিনা জানা যাবে কি বা গর্ভে যমজ সন্তান বুঝার উপায় ?
- জমজ বাচ্চা কত সপ্তাহে ডেলিভারি হয় ?
মায়ের জরায়ুতে ভ্রুনের সৃষ্টি ও বৃদ্ধি
একজন মহিলা স্বাভাবিকভাবে কি করে গর্ভধারণ করে, সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে চাই ।
ডিম্বাণু ও শুক্রাণু কিভাবে মিলিত হয় বা ফার্টিলােইজেশন বা নিষিক্তকরণ কি ?
প্রত্যেক মাসে মহিলাদের দুই ডিম্বাশয়ের যে কোন একটিতে ১টি ডিম পূর্ণতা লাভ করে । এই ডিমটি সাধারণত পরবর্তী মাসিকের ২ সপ্তাহ আগে ডিম্বাশয় থেকে বেরিয়ে আসে । ফেলোপিয়ান নলের মধ্য দিয়ে একটা স্রোত জরায়ুর দিকে প্রবাহিত হতে থাকে। এর ফলে ডিম্বাশয় হতে ছাড়া পাওয়া ডিমটি ফেলোপিয়ান নলে ঢুকে পড়ে । এই নলের মধ্য দিয়ে ডিম্বাণু জরায়ুর দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় যদি কোন শুক্রাণুর সাথে এর মিলিত হয়, এ ঘটনাকে ফার্টিলােইজেশন বা নিষিক্তকরণ বলা হয়। এখান থেকেই জীবনের শুরু হয়। শুক্রানুগুলো সহবাসের সময় সাধারণত যৌননালীর উপরের ভাগে লিঙ্গ হতে নির্গত হয় । শুক্রাণুগুলো একটি মাথা ও একটি লেজ থাকে । এই লেজ দ্বারা এরা জরায়ু হয়ে ফেলোপিয়ান নলের দিকে ধাবিত হতে থাকে । আর তখন যদি এই ফেলোপিয়ান নলে কোন ডিম থাকে, তবে তা শুক্রায়িত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । কেবলমাত্র ১টি শুক্রাণুই ১টি ডিমকে শুক্রায়িত করতে পারে । অথচ প্রতি বীর্যপাতে লক্ষ লক্ষ শুক্রাণু নির্গত হয় ।
ইমপ্লান্টেশন কখন হয় এবং ইমপ্লান্টেশন বলতে কি বুঝায় ?
শুক্রায়িত ডিমটি তখন ফেলোপিয়ান নল হতে জরায়ুর দিকে যেতে থাকে । জরায়ু পর্যন্ত পৌঁছাতে এর ছয় দিন সময় লাগে। জরায়ুতে পৌঁছানোর পর এটি জরায়ুর এনডোমেট্রিয়ামের মধ্যে ঢুকে পড়ে । একে ইমপ্লোনটেশান বলে । এরপর সেটি সেখানেই আস্তে আস্তে বৃদ্ধি লাভ করে একটি পূর্ণাঙ্গ মানব শিশুতে রূপান্তরিত হয়। শিশুর বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গঠিত হয়ে একটা মানব শিশুর আকৃতি নিতে ১২ সপ্তাহ সময় লাগে ।
ভ্রুণ কি ও ভ্রুণ কিভাবে তৈরি হয় ?
মাতৃগর্ভে অবস্থানের সময় প্রথম ৮ সপ্তাহকাল শিশুকে এ্যাব্রায়ো বা ভ্রূণ বলে । এই ৮ সপ্তাহ পর হতে শিশুর জন্মের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত একে ফিটাস (Foetus) বলে ।
যমজ শিশু হওয়ার কারণ বা যমজ সন্তান হওয়ার উপায় ? যমজ সন্তান কেন হয় ?
গর্ভের একের অধিক শিশুর জন্ম (Multiple Pregnancy):
একই সময়ে যখন একের অধিক শিশু গর্ভে থাকে তখন এই গর্ভকে মাল্টিপল (Multiple Pregnancy) গর্ভ বলা হয়। এই মাল্টিপল গর্ভের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় টুইন (Twin) বা জমজ। এতে একই সাথে গর্ভে দুটি শিশু থাকে । জমজ দু ধরনের হয়ে থাকে, যেমন ১. বাইনোভুলার (Binovular) এবং ২. ইউনিওভুলার (Uniovular) টুইন । এই দুই প্রকার জমজের মধ্যে আবার বাইনোভুলার জমজ বেশি পাওয়া যায় । এই প্রক্রিয়ায় দুটি পৃথক ডিম্ব (Ovum) দুটি পৃথক শুক্রাণু (Sperm) দ্বারা নিষিক্ত (Fertilized) হয়ে থাকে । এ ধরনের জমজ বংশানুক্রমিকভাবে দেখা যায় এবং মায়ের বয়স বাড়ার সাথে সাথে এ ধরনের জমজ হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়তে থাকে । যেহেতু এ ধরনের জমজ দুটি আলাদা ডিম্ব থেকে সৃষ্টি হয়ে থাকে, তাই এ ধরনের জমজ বাচ্চারা একই লিঙ্গ বা ভিন্ন লিঙ্গেরও হতে পারে । অন্যদিকে ইউনিওভুলার জমজের ক্ষেত্রে একটি মাত্র নিষিক্ত ডিম্ব (Fertilized Ovum) বিভক্ত হয়ে দুটি বাচ্চায় পরিণত হয় । আর তাই এ ধরনের জমজ বাচ্চারা সব সময়ই একই লিঙ্গের অর্থাৎ দুটি ছেলে কিংবা দুটি মেয়ে হয়ে থাকে ।
আরও পড়ুনঃ খালি পেটে লেবু খাওয়ার উপকারিতা ? লেবু পাতার উপকারিতা ? ক্যান্সার প্রতিরোধে লেবু
জমজ বাচ্চা হলে করনীয় বা যমজ সন্তানের জটিলতা কতটা সাধারণ ?
একক গর্ভের (Single Pregnancy) চেয়ে মাল্টিপল গর্ভে মা ও বাচ্চাদের জটিলতা অনেক বেশি হয়। বাচ্চাদের জটিলতার মধ্যে পরিপক্বতা (Maturity) লাভের পূর্বেই ভূমিষ্ঠ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে । এর ফলে নবজাতকের মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায় । অন্যদিকে মায়ের ঝুঁকির মধ্যে ডেলিভারির পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ উল্লেখযোগ্য ।
জমজ সন্তান আছে কিনা জানা যাবে কি বা গর্ভে যমজ সন্তান বুঝার উপায় ?
মাল্টিপ্ল গর্ভ নির্ণয় করার সবচেয়ে বড় উপায় হল আল্ট্রাসনোগ্রাফি (Ultrasonography) পরীক্ষা। এই পরীক্ষা দ্বারা ১৬-১৮ সপ্তাহের গর্ভেরসময় প্রায় শতকরা ১০০ ভাগ মাল্টিপ্ল গর্ভ নির্ণয় করা সম্ভব ।
আরও পড়ুনঃ দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল প্রযুক্তি ? ই-নামজারি কি ? ভূমি মালিকদের আধুনিক কার্ড ?
জমজ বাচ্চা কত সপ্তাহে ডেলিভারি হয় ?
জমজ বাচ্চা কত সপ্তাহে ডেলিভারি হয়ঃ সাধারণত ৩৭-৩৮ সপ্তাহে ডেলিভারি হতে পারে। সাধারণ একক বাচ্চা হলে ৪০ সপ্তাহ সময় লাগে।
মাল্টিপ্ল গর্ভ হলে প্রথম থেকেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলা উত্তম । যেহেতু এই ধরনের গর্ভে বাচ্চা পরিপক্বতা লাভের আগেই ভূমিষ্ঠ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে । তাই যে সব হাসপাতালে কম পরিপক্ক নবজাতকের যত্নের ভাল ব্যবস্থা আছে, ঐসব হাসপাতালে সন্তান ভূমিষ্ঠ করার চিন্তা- ভাবনা আগে থেকেই করা উচিত ।
গুগল নিউজ হতে আপডেট ” নিউজ হতে আইবাস++ ও সরকারি নিউজের আপডেট সংগ্রহ করে নিতে পারেন।
রিলেটেড ট্যাগ: ভ্রুণ কি, ভ্রুণ কিভাবে তৈরি হয়, শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলনকে কি বলে , ফার্টিলােইজেশন বা নিষিক্তকরণ কি ?,ইমপ্লান্টেশন কখন হয় এবং ইমপ্লান্টেশন বলতে কি বুঝায় ,যমজ শিশু হওয়ার কারণ বা যমজ সন্তান হওয়ার উপায় ? যমজ সন্তান কেন হয় ?,জমজ বাচ্চা হলে করনীয় বা যমজ সন্তানের জটিলতা কতটা সাধারণ ?, জমজ সন্তান আছে কিনা জানা যাবে কি বা গর্ভে যমজ সন্তান বুঝার উপায় ?.জমজ বাচ্চা কত সপ্তাহে ডেলিভারি হয় ?
আমি বাংলাদেশ সরকারের অডিট এন্ড একাউন্টস বিভাগের একজন কর্মচারি। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে কর্মরত থাকায় বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শেয়ার করে থাকি। তারপরও যে কোন ভুল ত্রুটি হলে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কোন পরামর্শ থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।