nocomments

নবজাতক জন্মের পর করণীয় কি কি ? নবজাতকের নাভির যত্ন ? নবজাতকের গোসলের নিয়ম ?

পোস্ট সামারীঃ

  • কত দিনের বাচ্চাকে নবজাতক বলা হয়?
  • বাচ্চা জন্মের পরপরই কি করা উচিত ?
  • নবজাতককে প্রথম কখন গোসল করানো হয় বা নবজাতকের গোসলের নিয়ম ?
  • নবজাতকের পায়খানা বা নবজাতকের পায়খানা কেমন হয়?
  • নবজাতকের নাভির যত্ন বা নাভি পড়ে যাওয়ার পর নাভি পরিষ্কার করার উপায় ?
  • নবজাতকের পরিচর্যা বা নবজাতকের যত্নের প্রাথমিক  ধাপ কি কি ?
  • বাচ্চার বিপদ চিহ্ন বা বাচ্চাদের বিপদের লক্ষণ কি কি ?

কত দিনের বাচ্চাকে নবজাতক বলা হয় ?

বাচ্চা জন্মের পর হতে ২৮ দিন পর্যন্ত বয়সী শিশুকে নবজাতক বলা হয়। এ সময় মা ও ছোট বাচ্চা দুজনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ৷ নবজাতককে নিরাপদ রাখার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কোনো বিকল্প নেই। ওর নাজুক নমনীয় দেহ অতিশয় সহজেই বিভিন্ন রোগজীবাণু দ্বারা আক্রান্ত  হতে পারে ৷

গুগল নিউজ হতে আপডেট ” নিউজ হতে আইবাস++ ও সরকারি নিউজের আপডেট সংগ্রহ করে নিতে পারেন।

বাচ্চা জন্মের পরপরই কি করা উচিত ? নবজাতক জন্মের পর করণীয় ?

 বাচ্চা জন্মের এক ঘণ্টা শিশুর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সময়টা শিশুর জন্য ‘গোল্ডেন ওয়ান আওয়ার’। নবজাতক জম্মের পরে ১ম ও একমাত্র কাজ হলো মায়ের দুধ (শালদুধ) খাওয়ানো। শালদুধ শিশুর জন্য প্রথম টিকা হিসেবে কাজ করে। তার সাথে শিশুকে নানারকম রোগ থেকে রক্ষা করে। শালদুধ পরিমাণে কম হলেও শিশুর জন্য যথেষ্ট পরিমাণ পুষ্টি জোগায়। শালদুধ খাওয়ালে শিশুর রাতকানা, জন্ডিস ও অন্যান্য রোগ হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। শালদুধ খাওয়ালে মা ও ছোট্ট শিশু উভয়েই সুস্থ থাকে। শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো বলতে বোঝায় শিশুকে পূরণ ছয় মাস শুধুমাত্র বুকের দুধই পান করানো।

আরও জানুনঃ সর্বজনীন পেনশন পেতে থাকবে কোন হয়রানি, চালু হবে মুঠো ফোন অ্যাপ ? সর্বজনীন পেনশন ফান্ডের টাকা বিনিয়োগ হবে লাভজনক খাতে ?



জন্মের পর নবজাতককে কোমল কাপড় দিয়ে পরিষ্কারভাবে করে নিতে হবে। গরমের সময় শিশুকে মোটা কোনো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা সমীচীন নয়। তাতে ছোট্ট শিশু অস্থির হয়ে যেতে পারে। শিশুকে পাতলা কোমল কাপড় দিয়ে জড়িয়ে রাখলেই চলবে।

নবজাতককে প্রথম কখন গোসল করানো হয় বা নবজাতকের গোসলের নিয়ম ?

শিশুর জম্মের তিন দিনের মধ্যে নবজাতককে স্নান করানো যাবে না। নবজাতকের স্বাভাবিক ওজন হলো ২.৫ কেজি। এই ওজনের চেয়ে কম বা কোনো সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

শিশু ভুমিষ্ঠ হওয়ার পরে নবজাতককে মধু বা চিনির পানি খাওয়ানো সঠিক নয়। বাচ্চা জন্মের পর মাকে বেশি করে পানি খেতে হবে। এ ব্যতীত ফেমেলির স্বাভাবিক খাদ্য মাকে খেতে দিতে হবে।

আরও জানুনঃ  গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা এবং গর্ভবতী মায়ের খাবার ?


জন্মের পর হতে ২৮ দিন পর্যন্ত বয়সী নবজাতককে যে ঘরে রাখা হয়, অনেকে সেই ঘরের দরজা–জানালা অফ করে রাখে। এটা করা কখনোই ঠিক নয়। নবজাতক ও মাকে যে কামরায় রাখা হয়, সেই কক্ষের দরজা–জানালা উন্মুক্ত করা রাখা উচিত। যাতে বাইরের আলো–বাতাস ঘরে আসতে পারে।

বাইরে হতে কেউ এসেই নবজাতককে কোলে তুলে নেওয়া উচিত নয়। কারণ, বাইরে থেকে কেউ এলে তার শরীরে অনেক ময়লা–জীবাণু থাকতে পারে। শিশুকে হাত দিয়ে ধরার ফলে সেগুলো নবজাতককে আক্রান্ত করতে পারে। এজন্য নবজাতককে কোলে না নেওয়াই উচিত। আর যদি নিতে হয়, তাহলে কোলে নেওয়ার আগে প্রয়োগ করার জন্য পারেন জীবাণুনাশক হ্যান্ডওয়াশ পক্ষান্তরে ইনস্ট্যান্ট হ্যান্ড স্যানিটাইজার। এ ছাড়া হাত ধুয়ে নেওয়া সমীচীন শিশুর ডায়াপার বা প্রস্রাব-পায়খানা করা কাপড়-কাঁথা পাল্টানোর পরে।

নবজাতকের পায়খানা বা নবজাতকের পায়খানা কেমন হয়?

নবজাতকের প্রথম মল গামের মতো আঠালো, আর্দ্র ও কালচে বর্ণের হয়ে থাকে। মিকোনিয়ামের কারণে এ রকম হয়। শতকরা ৯০ জনের বেশি পূর্ণ গর্ভকাল পাওয়া (৩৭ সপ্তাহের বেশি গর্ভকাল পেরোনো) নবজাতক জম্ম নেওয়ার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে ও অবশিষ্ট নবজাতকের ৩৬ ঘন্টার মধ্যে মলত্যাগ করে থাকে।   

আরও জানুনঃ গর্ভবতী মায়ের যত্ন কি কি এবং গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের সতর্কতা ? গর্ভবতী মায়ের কি কি চেকআপ করা দরকার ?

নবজাতকের নাভির যত্ন বা নাভি পড়ে যাওয়ার পর নাভি পরিষ্কার করার উপায় ?

  • নবজাতক জম্মের ৩ সপ্তাহের মধ্যেই নাভি শুকিয়ে ঝরে পড়ে যায়।
  • নবজাতকের নাভির সঠিক যত্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মায়ের সাথে সংযুক্ত  নাড়ি কাটার পর ৭ দশমিক ১ শতাংশ ক্লোরহেক্সিডিন জাতীয় জীবানুনাশক লাগাতে হয়।বাচ্চা জম্মের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীরা বাচ্চার নাভিতে এটি লাগিয়ে দেন। নবজাতক নাভিতে কোনো ড্রেসিং, ব্যান্ডেজ বা অ্যান্টিসেপটিক মলম জাতীয় কোন কিছুই দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
  • নবজাতকের নাভি পরিষ্কার ও শুকনো রাখতে হবে।
  • নাভি ঝরে না যাওয়া পর্যন্ত শিশুকে টাবে বা সরাসরি গায়ে পানি ঢেলে ঠিক নয়। জন্মের পর প্রথম ৩ সপ্তাহ স্পঞ্জের সাহায্যে শিশুর গা ধীরে ধীরে মুছে দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত।
  •  ছোট বাচ্চা অতিরিক্ত কান্না করলে, কোষ্ঠ কাঠিন্য বা অন্য কারণে পেটে চাপ পড়ার কারণে নাভি ফুলে গেলেও তা স্বাভাবিক পদ্ধতিতে পূর্বের অবস্থায় নিজে নিজেই ফিরে আসে একারণে এমনটা হলে দুশ্চিতার কোনো কারণ নেই।
  •  নবজাতকের নাভিতে অযথা হাত দেওয়া বাঁধা উচিত নয়। আর নাভি কাপড় দিয়ে না ঢেকে উন্মুক্ত করা রাখতে হবে। আর নজর রাখার জন্য হবে নাভি যেন ক্লিয়ার ও শুকনো থাকে।
  • নবজাতকের নাভিতে দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজ, লালচে রং ধারণ করলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

আরও জানুনঃ অ্যামনিওটিক ফ্লুইড কি ? অ্যামনিওটিক ফ্লুইড এর কাজ কি ? গর্ভফুল কি ? গর্ভবতী কত দিন পর সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় ?

নবজাতকের পরিচর্যা বা নবজাতকের যত্নের প্রাথমিক  ধাপ কি কি ?

বিখ্যাত চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাশোর আঁকা ছবি ‘মাতৃত্ব’।

১. জন্মের পর থেকেই বাচ্চাকে সব সময় উষ্ণ রাখুন। কারণ বাচ্চারা বড়দের মতো শরীরের তাপমাত্রা রক্ষা করতে পারে না । তাই তাপমাত্রা কমে গেলে বাচ্চার নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে ।

২. বাচ্চার শ্বাস-প্রশ্বাস ও শরীরের রঙের দিকে লক্ষ্য রাখুন। পুরো শরীর ফ্যাকাশে বা নীল বর্ণ হয়ে গেলে কর্তব্যরত সেবিকা ও ডাক্তারের সাহায্য নিন ।

বাচ্চাকে উষ্ণ রাখার জন্য জন্মের পরপরই বাচ্চাকে শুষ্ক করুন এবং তারপর ভেজা কাপড় সরিয়ে নিয়ে পুনরায় শুকনো কাপড় দিয়ে ভালো করে ঢেকে রাখুন । ঘরে শীতল বায়ু চলাচল বন্ধ রাখুন । প্রয়োজনে, বিশেষ করে শীতের সময়ে ঘরে হিটার ব্যবহার করুন ।

৩. প্রতি আধঘণ্টা পরপর বাচ্চার কাঁথা, নাড়ির অবশিষ্টাংশ পরীক্ষা করে দেখুন তা থেকে কোনো রক্তক্ষরণ হচ্ছে কিনা । কাটা নাড়ির অবশিষ্টাংশ সব সময় পরিষ্কার রাখুন । সাধারণত নাভিতে কোন কিছু দেওয়ার প্রয়োজন হয় না ।

৪. শিশুর জন্মের পরপরই, সম্ভব হলে জন্মের প্রথম আধা ঘণ্টার মধ্যেই বাচ্চাকে মায়ের বুকে দিন । মায়ের বুকের দুধই বাচ্চার জন্য সর্বোত্তম খাবার ।

আরও জানুনঃ গর্ভাবস্থায় বা প্রেগনেন্ট হলে নারীর শরীরের পরিবর্তন বা লক্ষণ দেখা যায় ?

বাচ্চার বিপদ চিহ্ন বা বাচ্চাদের বিপদের লক্ষণ কি কি ?

নিম্নের বিপদচিহ্নগুলো বাচ্চার মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ । তাই মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে বাচ্চার বিপদচিহ্নগুলো সম্বন্ধে জানতে হবে এবং দ্রুত শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে । নিচে বাচ্চার বিপদ চিহ্নগুলোর বর্ণনা দেওয়া হলো :

১. বাচ্চা নেতিয়ে পড়া । দুধ খেতে অনীহা বা মোটেই না চোষা । ২. শ্বাসকষ্ট বা দ্রুত শ্বাস নেয়া (প্রতি মিনিটে ৬০ বারের বেশি শ্বাস)

৩. জ্বর হলে বা শরীরের তাপমাত্রা কমে গেলে । ৪. নাভির চারিদিক লাল হয়ে যাওয়া বা নাভি থেকে দুর্গন্ধযুক্ত রস বা পুঁজ পড়া ।

আরও জানুনঃ নরমাল ডেলিভারির কত দিন পর হতে স্বামী স্ত্রী  সহবাস করা যায় ? সিজারে বাচ্চা হওয়ার কত দিন পর হতে স্বামী স্ত্রী  সহবাস করা যায় ?

৫. চোখ ওঠা বা চোখ হতে পুঁজ পড়া ।

৬. জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বা জন্মের ১৪ দিন পর হাতের তালু এবং পায়ের পাতায় জন্ডিস হওয়া । জন্মের ২৪ ঘণ্টা পর হতে ১৪ দিনের মধ্যে সৃষ্ট জন্ডিসে সাধারণত কোনো সমস্যা হয় না ।

৭. খিঁচুনী হওয়া ।

রিলেটেড ট্যাগঃ নবজাতক জন্মের পর করণীয়, নবজাতকের নাভির যত্ন, নবজাতকের গোসলের নিয়ম, নবজাতকের পায়খানা, নবজাতককে প্রথম কখন গোসল করানো হয় বা নবজাতকের গোসলের নিয়ম ?, নবজাতকের পায়খানা বা নবজাতকের পায়খানা কেমন হয়?,নবজাতক জন্মের পর করণীয় ?

Reply

error: Content is protected !!